ফেসবুক আইডি রেস্ট্রিক্টেড হলে করণীয়

ফেসবুক আইডি রেস্ট্রিক্টেড হলে করণীয় আমাদের অনেকের কাছেই অজানা। যার কারণে কখনো ফেসবুক রেস্ট্রিক্টেড হয়ে গেলে আমাদেরকে বিপদে পড়তে হয়। অনেকে আমরা বুঝতেই পারিনা যে আমাদের আইডি রেস্ট্রিক্টেড কেনো হলো।
ফেসবুক আইডি রেস্ট্রিক্টেড হলে করণীয়
তাই আজকের আর্টিকেলে আমরা ফেসবুক আইডি বা ফেসবুক পেজ রেস্ট্রিক্টেড কেনো হয় এবং হলেও কী কী করা উচিত তা সম্পর্কে বিস্তারিত জানবো। আশা করি পুরো আর্টিকেল জুড়ে আমাদের সাথেই থাকবেন!

পেজ সুচিপত্রঃ ফেসবুক আইডি রেস্ট্রিক্টেড হলে করণীয়  

ফেসবুক আইডি বা ফেসবুক পেজ রেস্ট্রিকশন কী

ফেসবুক আইডি বা ফেসবুক পেজ রেস্ট্রিকশন কী তা হয়তো আমাদের অনেকের কাছে জানা থাকতে পারে। কেননা ফেসবুক ব্যবহার করে না এমন মানুষ বর্তমানে নাই বললেই চলে। এখন বলতে গেলে সকলের এক বা একাধিক ফেসবুক আইডি থেকে থাকে। অনেকেই আবার নানান কাজে ফেসবুক পেজ খুলে থাকেন। যা থেকে নিজের একাউন্ট বা পেজ রেস্ট্রিক্টেড না হলেও অন্যের আইডি বা পেজ রেস্ট্রিক্টেড হওয়ার কথা আমরা প্রায়ই শুনে থাকি। 

আবার আমাদের মধ্যে এমন অনেক জন থাকতেই পারেন যারা এই বিষয়ে তেমন ভালো কোনো ধারণা রাখেন না। অনেকেই খুব বেসিক কাজে যেমন শুধু যোগাযোগ রাখা বা নিজের ডেটা শেয়ার করার কাজে ফেসবুক ব্যবহার করে থাকেন। তাদের ক্ষেত্রে ফেসবুক রেস্ট্রিকশনের ব্যাপারটি একদম অজানা হতে পারে। যার   কারণে যদি কোনো দিন তাদের ফেসবুক পেজ রেস্ট্রিক্টেড হয়ে যায় তাহলে তারা ঠিক মতো বুঝে উঠতে পারবেন না।

এজন্য সকলের কাছে প্রথমেই ফেসবুক আইডি বা ফেসবুক পেজ রেস্ট্রিকশন কী তা সম্পর্কে সঠিক তথ্য পৌঁছিয়ে দেওয়া উচিত। কোনো কারণে ফেসবুকের কোনো নীতি ভঙ্গ হলে ফেসবুক থেকে বেশ কিছু বিষয়ে নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়। যার ফলে উক্ত ফেসবুক ব্যবহার কারী তার একাউন্ট বা পেজ ব্যবহার করার সময় বিভিন্ন বাধার সম্মুখীন হতে হয়। আর এটিকেই ফেসবুক রেস্ট্রিকশন বলা হয়।

ফেসবুক আইডি বা ফেসবুক পেজ রেস্ট্রিকশন বুঝার উপায়

ফেসবুক আইডি বা ফেসবুক পেজ রেস্ট্রিকশন বুঝার উপায় কী নিশ্চয় এখন তা ভাবছেন! আসুন তাইলে জেনে নেওয়া যাক। আমরা উপরে আগেই জেনেছি যে ফেসবুক আইডি রেস্ট্রিক্টেড হলে ব্যবহারকারীর বেশ কিছু কাজের উপর ফেসবুক নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে দেয়। অর্থাৎ আপনার ফেসবুকে আপনি যদি কোনো কাজ করতে গেলে বাধার সম্মুখীন হন তাহলে বুজতে হবে আপনার একাউন্ট রেস্ট্রিক্টেড হয়ে গেছে।

যদিও আইডি বা পেজ রেস্ট্রিক্টেড হওয়ার আগে প্রতিবারই নোটিফিকেশন দিয়ে জানিয়ে দেওয়া হয়। যেখানে উল্লেখ করা থাকে যে কী কারণে কেনো এবং কতটুকু সময়ের জন্য কী কী বিষয়ে আপনার আইডি বা পেজে রেস্ট্রিকশন দেওয়া হয়েছে। সেখান থেকেই মূলত স্পষ্ট বুঝা সম্ভব যে আপনার আইডি বা পেজ কী রেস্ট্রিক্টেড হয়েছে কিনা। 

এই রেস্ট্রিকশনের কারণে অন্যের পোস্টে কমেন্ট করা বা রিয়েক্ট দেওয়ার কাজ কিছু সময়ের জন্য বন্ধ থাকে। আবার অনেকে অনেক সময় রেস্ট্রিকশনের কারণে নিজের আইডিতে নতুন কোনো প্রকার তথ্য শেয়ার করতে পারেনা। কিন্তু নিয়মিত অন্যের তথ্য বা যেকোনো খবর দেখতে পারে। এই সময়ের মেয়াদ কাল সাধারণত ৭- ৩০ দিনের মতো হতে পারে। আবার অনেকে একদিনের জন্যও রেস্ট্রিক্টেড হয়ে যায়।

ফেসবুক আইডি রেস্ট্রিক্টেড হওয়ার কারণ

ফেসবুক আইডি রেস্ট্রিক্টেড হওয়ার কারণ গুলো না জানার কারণেই মূলত আমাদেরকে ফেসবুক আইডি বা পেজ রেস্ট্রিকশনের মুখে পড়তে হয়। বিভিন্ন কারণে ফেসবুক আইডি রেস্ট্রিক্টেড হতে পারে। একেক জনের ক্ষেত্রে একেক কারণ হয়ে থাকে যার কারণে ফেসবুক রেস্ট্রিক্টেড হয়। আমরা এমন কয়েকটি কারণ এখন জানবো যা প্রায় সকলের ক্ষেত্রেই হতে পারে।
 
ফেসবুকের নীতিমালা মেনে না চলাঃ ফেসবুক ব্যবহারের সময় আপনার কোনো প্রকার কর্মকান্ড যদি এমন হয় যেটা ফেসবুকের নীতিমালার বাইরে চলে যাচ্ছে তাহলে আপনার আইডি রেস্ট্রিক্টেড হয়ে যেতে পারে। এটি যেকোনো আইডি রেস্ট্রিক্টেড হওয়ার সবচেয়ে প্রথম কারণ। কেননা ফেসবুক  খুব গুরুত্ব দিয়ে এসকল দিক বিবেচনা করে থাকে। কোনো ব্যবহার কারী ফেসবুক কমিউনিটির নীতি অমান্য করলেই ফেসবুক তার একাউন্ট রেস্ট্রিক্টেড করে দিতে পারে।
ফেসবুক আইডি রেস্ট্রিক্টেড হওয়ার কারণ
অস্বাভাবিক কার্যক্রম পরিচালনা করাঃ কোনো ব্যক্তি যদি ফেসবুককে কাজে লাগিয়ে অস্বাভাবিক কোনো কাজ করে এবং ফেসবুক যদি তা বুঝতে পারে তাহলে ফেসবুক কমিউনিটি উক্ত একাউন্ট রেস্ট্রিক্টেড করে দেয়। 

স্প্যামিং করাঃ স্প্যামিং বলতে কোনো কাজ একাধিক বার করাকে বুঝায় যা মূলত অপ্রয়োজনীয় বা বিশেষ কোনো তাৎপর্য বহন করে না। ফেসবুকে স্প্যামিং বলতেও এরকম কাজকেই বুঝায়। যেমন একই জিনিস একাধিক বার বিভিন্ন ব্যক্তিকে পাঠানো বা একই জিনিস বার বার কমেন্ট করা। এগুলো ফেসবুকের কাছে সন্দেহ জনক মনে হলে ফেসবুক উক্ত একাউন্ট কিছু সময়ের জন্য রেস্ট্রিক্টেড করে রেখে দিতে পারে।

অবৈধ কোনো সাইটে প্রবেশঃ আমরা অনেক সময় বিভিন্ন রকম মুভি দেখার জন্য বিভিন্ন ওয়েবসাইটের সাহায্য নিয়ে থাকি। অনেক সময় সেগুলোতে প্রবেশ করার জন্য ফেসবুকের সাহায্য নেওয়া হয়। কিন্তু কেউ যদি কোনো অবৈধ ওয়েবসাইটে ফেসবুক দিয়ে প্রবেশ করার চেষ্টা করে তাহলে ফেসবুক তার আইডি রেস্ট্রিক্টেড এমনকি ব্যান ও করে দিতে পারে।

একাধিক রিপোর্ট আসলেঃ কখনো যদি আপনার ফেসবুকে একই সময়ে অনেকজন মিলে একাধিক বার রিপোর্ট করে থাকে তাহলেও ফেসবুক সন্দেহজনক মনে করে আপনার আইডি রেস্ট্রিক্টেড করে দিতে পারে।

ফেসবুক আইডি রেস্ট্রিক্টেড হলে করণীয়

ফেসবুক আইডি রেস্ট্রিক্টেড হলে করণীয় কী তা এখন আমাদের জানা উচিত। যেহেতু ফেসবুক রেস্ট্রিক্টেড হওয়ার বিভিন্ন কারণ গুলো সম্পর্কে উপরে আমরা ইতিমধ্যে জেনেছি। যেসকল কারণ গুলোর জন্য ফেসবুক আমাদের আইডি রেস্ট্রিক্টেড করতে পারে সেগুলো সম্পর্কে সঠিক ধারণা অর্জনের পরে এখন তাহলে ফেসবুক রেস্ট্রিক্টেড হওয়ার পর কী করা উচিত তা জেনে নেওয়া যাক। 

ফেসবুক রেস্ট্রিক্টেড হলে সাধারণত একটি নির্দিষ্ট টাইম বেঁধে দেয়। অর্থাৎ কতদিনের জন্য আপনার আইডি রেস্ট্রিক্টেড থাকবে তা নোটিফিকেশনের মাধ্যমে জানিয়ে দেয় ফেসবুক। আমরা আগেই জেনেছি এই সময়সীমা ১-৩০ দিন পর্যন্ত হয়ে থাকতে পারে। তারপর ফেসবুক নিজে থেকেই আইডির রেস্ট্রিকশন সরিয়ে দিয়ে স্বাভাবিক করে দেয়। 

কিন্ত কেউ যদি এই সময়সীমার আগেই তার ফেসবুক একাউন্টের রেস্ট্রিকশন দূর করতে চায় তাহলে তাকে ফেসবুক কমিউনিটির কাছে আবেদন, ফিডব্যাক কিংবা রিপোর্ট পাঠাতে হবে। যেটা ফেসবুক কমিউনিটি পর্যবেক্ষণ করে আপনার আইডির রেস্ট্রিকশন সরিয়ে নিবে। এখন প্রশ্ন হলো কীভাবে এই আবেদন করা হয়???

এটির জন্য প্রথমেই ফেসবুকের অফিশিয়াল অ্যাপে প্রবেশ করতে হবে। সেখান থেকে ডানে দিকের উপরে থ্রী লাইনে ক্লিক করে সবার নিচে চলে আসতে হবে। সেখানে Report a problem নামে একটি অপশন থাকে। ওখানে যেয়ে ক্লিক করার পর continue to report a problem এ ক্লিক করতে হবে। কিন্তু এখান পর্যন্ত আসার আগে আপনাকে অন্য একটি কাজ আগেই করতে হবে।

সেটি হলো আপনার যে ফেসবুক আইডি রেস্ট্রিক্টেড হয়েছে তার একটি স্ক্রিনশট নিয়ে রাখা। এরপরের ধাপে include a report অপশনে ক্লিক করতে হবে। এখন প্রোফাইল অপশনে ঢুকে অ্যাড ইমেজ অপশনে সেই স্ক্রিনশট টি দিতে হবে। সেখানে নিজের সমস্যা লিখার জন্য একটি অপশন থাকবে ওখানে নিজের সমস্যা বিস্তারিত লিখতে হবে। এরপর send report এ ক্লিক করে অপেক্ষা করুন। 

কী কী উপায়ে ফেসবুক আইডি রেস্ট্রিকশন রোধ করা যায় 

কী কী উপায়ে ফেসবুক আইডি রেস্ট্রিকশন রোধ করা যায়??? এখন নিশ্চই এই ব্যাপারেও আমাদের জ্ঞান রাখা উচিত। কেননা ফেসবুক আইডি কী কারণে রেস্ট্রিক্টেড হয় এবং ফেসবুক আইডি রেস্ট্রিক্টেড হলে করণীয় কী তা উপরে আলোচনা করার মাধ্যমে আমরা জানতে পারলাম। এখন এটি আগে থেকেই কীভাবে রোধ করা যায় তার দিকে মনোযোগ দেওয়া যাক। 
কী কী উপায়ে ফেসবুক আইডি রেস্ট্রিকশন রোধ করা যায়
  • আমরা আগেই জেনেছি ফেসবুক একাউন্ট রেস্ট্রিক্টেড হওয়ার প্রথম কারণ হলো ফেসবুক কমিউনিটির নীতিমালা গুলো অমান্য করা। এজন্য ফেসবুক ব্যবহারের সময় অবশ্যই ফেসবুকের নীতিমালা গুলো ভালো ভাবে জেনে নিতে হবে। 
  • কাউকে আক্রমনাত্বক ভাবে কোনো কিছু পোস্ট করা যাবে না বা এমন কিছু শেয়ার করা যাবে না যেটায় অন্যের ক্ষতি হতে পারে।
  • ভুল তথ্য প্রকাশ করা বা প্রচার করা থেকে বিরত থাকতে হবে যেন কেউ বিরক্ত হয়ে আইডিতে রিপোর্ট না দেয়। 
  • স্প্যামিং বা অপ্রয়োজনীয় কাজকাম ও কথাবার্তা থেকে দূরে থাকতে হবে। কেননা এটি ফেসবুক নীতিমালা ভঙ্গের একটি কারণ। 
  • ফেসবুক একাউন্ট থেকে যে সে সাইটে প্রবেশ করা যাবে না। কোনো সাইটে প্রবেশ করার জন্য ফেসবুকের সাহায্য নিতে হলে আগে অবশ্যই যাচাই করে নিতে হবে যে উক্ত সাইটটি বৈধ কিনা।

শেষ কথা- ফেসবুক আইডি রেস্ট্রিক্টেড হলে করণীয় 

ফেসবুক আইডি রেস্ট্রিক্টেড হলে করণীয়, কী কী কারণে ফেসবুক রেস্ট্রিক্টেড হতে পারে এবং কীভাবে এটি থেকে বাঁচা যায় তা নিয়ে আমরা উপরে বিস্তারিত আলোচনা করেছি। আমাদের জানা অজানা বিভিন্ন তথ্য আপনাদের সামনে তুলে ধরার চেষ্টা করেছি যার ফলে আপনারা সকল দিক সম্পর্কে সঠিক ধারণা লাভ করতে পারেন। আপনি যদি  উপরের কথা গুলো মনযোগ সহকারে পড়ে থাকেন তাহলে নিশ্চয় এই বিষয়ে আপনার স্বচ্ছ ধারণা পেয়েছেন বলে আমরা বিশ্বাসী। আজকের আর্টিকেলটি যদি আপনার ভালো লেগে থাকে তাহলে অবশ্যই বন্ধুদের সাথে শেয়ার করুন। ধন্যবাদ! 








এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url