বাংলা আর্টিকেল লেখার নিয়ম

 
বাংলা আর্টিকেল লেখার নিয়ম জানতে আজকের আর্টিকেলটি শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত পড়ার অনুরোধ রইল। কেননা আজকের আর্টিকেলে থাকছে বাংলায় আর্টিকেল লেখার বিভিন্ন নিয়ম নীতি ও দিক নির্দেশনা।
বাংলা আর্টিকেল লেখার নিয়ম

আজকের আর্টিকেলটি শেষ করে জানতে পারবেন কীভাবে যেকোনো বিষয়ের উপর সঠিক নিয়মে বাংলায় আর্টিকেল লেখা যায়। এছাড়াও বাংলায় আর্টিকেল লিখে কী কী কাজ করা সম্ভব সেই বিষয়েও থাকছে বিস্তারিত আলোচনা।

পেজ সূচিপত্রঃ বাংলা আর্টিকেল লেখার নিয়ম

বাংলা আর্টিকেল লেখার নিয়ম

বাংলা আর্টিকেল লেখার নিয়ম প্রথম অবস্থায় অনেকেই সহজ ভাবে নিয়ে থাকেন। কিন্ত এটিকে আসলেই এতো সহজভাবে নেওয়া যুক্তি সঙ্গত নয়। কেননা এই নিয়ম গুলোর মধ্যে অনেক সূক্ষ্ম সূক্ষ্ম জিনিস রয়েছে যা একটি আর্টিকেলকে মান সম্মত করে তুলে যা পরবর্তীতে গুগলে ভালো রাঙ্কিং অর্জন করতে সক্ষম হয়। তাই জন্য বাংলায় আর্টিকেল লেখার নিয়ম গুলো সম্পর্কে আমাদের সঠিক ধারণা থাকা খুবই জরুরী।

সঠিক বিষয় বা ফোকাস কি ওয়ার্ড নির্বাচন করাঃ‌ আপনি যে বিষয়ে আর্টিকেল লিখতে আগ্রহী সেটি অবশ্যই মানুষের কাছে গ্রহণযোগ্য এবং জনপ্রিয় হওয়া জরুরী। কেননা অপ্রয়োজনীয় বা অগ্রহণযোগ্য কোনো বিষয় সম্পর্কে লেখা আর্টিকেল মানুষ সাধারণত পড়তে চায় না। আর মানুষ পড়ে না এরকম আর্টিকেল লিখে সাধারণত কোনো ভালো ফল পাওয়া সম্ভব না। এজন্য সঠিক বিষয় বা ফোকাস কি ওয়ার্ড নির্বাচন করা খুবই জরুরী।

এখন প্রশ্ন হতে পারে যে ফোকাস কি ওয়ার্ড কী?! ফোকাস কি ওয়ার্ড হলো সেই বিষয়বস্তু যেটিকে কেন্দ্র করে আপনার পুরো আর্টিকেলটি শুরু হয়ে শেষ হবে। চলুন বিষয়টিকে আরো ভেঙে বলা যাক। ধরুন এখন যে আর্টিকেলটি পড়ছেন এটির ফোকাস কী ওয়ার্ড হলো ‘বাংলা আর্টিকেল লেখার নিয়ম’। অর্থাৎ এই বিষয়ে মানুষের জানার আগ্রহ আছে রয়েছে বিধায় এটিকে ফোকাস কি ওয়ার্ড হিসেবে নির্বাচন করা হয়েছে।

সেকেন্ডারি ফোকাস কি ওয়ার্ড ব্যবহার করাঃ আর্টিকেল লেখার ক্ষেত্রে সেকেন্ডারি ফোকাস কি ওয়ার্ড গুলোও বেশ গুরুত্বপূর্ণ কাজ করে থাকে। সেকেন্ডারি ফোকাস কিওয়ার্ড বলতে সেই বিষয় গুলোকে বুঝায় যা আপনার মেইন ফোকাস কি ওয়ার্ড এর সাথে সঙ্গতিপূর্ণ। অর্থাৎ মেইন ফোকাস কি ওয়ার্ডকে কেন্দ্র করে একই ক্যাটাগরির বিভিন্ন কি ওয়ার্ড যেগুলো গুগলে মানুষ সার্চ করে থাকে বা গুগলের সার্চ অপশনে দেখা যায়। 

প্রচুর পোস্ট পড়া এবং রিসার্চ করার প্রাকটিসঃ খুব স্বাভাবিকভাবেই যেকোনো বিষয়ে লেখার আগে অবশ্যই সেই সম্পর্কে আমাদের সঠিক ধারণা থাকা প্রয়োজন। কেননা কোন প্রকার সঠিক তথ্য বা জ্ঞান ছাড়া আমরা কোনো বিষয়ে অন্যকে খুব বেশি কিছু বলতে পারিনা বা জানাতে পারিনা। তাই এই সীমাবদ্ধতাকে দূর করার জন্যই অনেক তথ্য রিসার্চ করার প্রয়োজন পড়ে। আমরা কোন বিষয় নিয়ে অনেক রিসার্চ করে কিংবা পড়াশোনা করে সেই বিষয়ে আরো ভালো তথ্য জানতে পারি।

ঠিক একইভাবে বাংলায় আর্টিকেল লেখার ক্ষেত্রেও আমাদেরকে এই প্র্যাক্টিস বা মানসিকতা বজায় রাখতে হবে। আমরা যখন একটি বিষয় নিয়ে আর্টিকেল লিখতে শুরু করবো তখন আমাদের অনেক তথ্যের প্রয়োজন হবে। এবং তা অবশ্যই সঠিক ও সত্য হওয়া জরুরী। আর তাই আর্টিকেল লেখার জন্য নিয়মিত বিভিন্ন ধরনের পোস্ট বা বিষয় নিয়ে রিসার্চ করার অভ্যাস গড়ে তুলতে হবে যা আপনাকে একজন ভালো আর্টিকেল রাইটার হতে সাহায্য করবে।

এছাড়াও নিয়মিত বিভিন্ন বিষয়ের আর্টিকেল পড়ার মাধ্যমে ধীরে ধীরে আপনার আর্টিকেল লেখার মান উন্নয়ন ও জ্ঞান বৃদ্ধি উভয়ই সম্ভব। অনেক সময় বিভিন্ন ধরনের শব্দ বা কথা বলার ধরন সম্পর্কে ধারণা পাওয়া যায় যা পরবর্তীতে মডিফাই করে নিজের আর্টিকেলে ব্যবহার করার মাধ্যমে আর্টিকেল লেখাকে আরো সহজ করে। আবার এটির মাধ্যমে নিজেদের বিভিন্ন বিষয়ে পুরনো ধারণা পরিবর্তন করারও একটি বড় সুযোগ তৈরি হয়।

আর্টিকেলে ভূমিকা এবং উপসংহার দেওয়াঃ একটি আর্টিকেলে ভূমিকা ও উপসংহার দিলে তাতে আর্টিকেলের মান বৃদ্ধি পায়। এখানে ভূমিকা বলতে আপনার আর্টিকেল সম্পর্কে তিন থেকে চার লাইন কথা পোস্টের শুরুতেই দেওয়াকে বোঝায়। এবং যেটি পড়ার মাধ্যমে একজন পাঠক শুরুতেই বুঝতে পারবে যে আর্টিকেলটি কি বিষয়ে লেখা হয়েছে কিংবা আর্টিকেলটি পড়ে সে কি কি বিষয় সম্পর্কে জানতে পারবে।

একটি আকর্ষণীয় ভূমিকা আপনার পাঠককে আর্টিকেলটি শেষ পর্যন্ত পড়ার জন্য আগ্রহী করে তুলতে সাহায্য করে। এটি যদি ব্যবহার করা না হয় বা আকর্ষণীয় না হয় তাহলে সম্ভাবনা থাকে যে পাঠক আপনার আর্টিকেলটি পড়বে না। আবার আর্টিকেলে উপসংহার দেওয়ার মাধ্যমে আর্টিকেল সম্পর্কে আপনার নিজস্ব কিছু মন্তব্য রাখতে হবে। যেটি পাঠককে কখনো কখনো সিদ্ধান্ত গ্রহণে সাহায্য করে থাকে এবং পরবর্তীতে নতুন পোস্ট পড়তে আগ্রহী করে তোলে।

আর্টিকেলে আকর্ষণীয় টাইটেল ব্যবহার করাঃ ফোকাস কি ওয়ার্ড এবং সেকেন্ডারি ফোকাস কি ওয়ার্ড গুলোকে নিয়ে আর্টিকেলে একাধিক আকর্ষণীয় টাইটেল ব্যবহার করতে হবে। যেগুলোর ফলে পাঠক উক্ত আর্টিকেলটি সামনে আরো পড়তে থাকার আগ্রহ পাবে। একটি এসইও ফ্রেন্ডলি আর্টিকেলের ক্ষেত্রে এই টাইটেল ব্যবহার করা খুবই গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয়। প্রথম অবস্থায় আর্টিকেল লেখার সময় প্রতিটি টাইটেলে ৫-৭ টি ওয়ার্ড রাখা ভালো। 
আর্টিকেলে আকর্ষণীয় টাইটেল ব্যবহার করা

একটি আর্টিকেলে ফোকাস কি ওয়ার্ড দশবার এবং সেকেন্ডারি  কি ওয়ার্ড প্রায় পাঁচবার রাখতে হবে। সব মিলিয়ে টোটাল ১৫টি কি ওয়ার্ড রাখা ভালো। একটি আর্টিকেলে একাধিকবার এইসব কিওয়ার্ড ইমপ্লিমেন্ট করার কারণ হলো এগুলো আমাদের আর্টিকেলকে দ্রুত গুগলে র‍্যাঙ্ক করতে সাহায্য করে। প্রয়োজন ব্যতীত এই সকল টাইটেলে বিরাম চিহ্নের ব্যবহার না করাই ভালো। এছাড়াও টাইটেল গুলোকে হেডিং ফরম্যাটে রাখা উচিত।

আর্টিকেল লেখার বিভিন্ন ফরমেট মনে রাখাঃ একটি আর্টিকেল লেখার সময় তা ফরমেটিং এর ক্ষেত্রে বিশেষ খেয়াল রাখতে হয়। যেমন লেখাগুলো জাস্টিফায় ফরম্যাটে রাখতে হবে। আবার একাধারে না লিখে লেখা গুলো প্যারা প্যারা আকারে রাখতে হবে। প্রতিটি প্যারা তিন থেকে সাড়ে তিন লাইনে রাখা ভালো। এবং প্রতিটি প্যারার নিচে কিছু অংশ ফাঁকা রাখতে হবে। এতে পাঠক পড়ার সময় বিরক্ত হবেন না কিংবা একঘেয়েমি অনুভূত হবে না। 

 আরো পড়ুনঃ আর্টিকেল লেখার নিয়ম- ব্লগে কন্টেন্ট লেখার নিয়ম


পোষ্টের মধ্যে ইন্টারনাল বা এক্সটার্নাল লিঙ্ক যুক্ত করাঃ একটি আর্টিকেল লেখার সময় এতে আপনার অন্য আরেকটি আর্টিকেলের লিংক বসানো উচিত। এবং সেই আর্টিকেলটি যেন উক্ত পোস্ট সম্পর্কিত কোনো বিষয়ের উপরেই হয়ে থাকে তা খেয়াল রাখতে হবে। অর্থাৎ পাঠক একটি বিষয়ে আপনার আর্টিকেল পড়ার সময় সেখানে একই ধরনের অন্য আরেকটি বিষয়ের উপর আর্টিকেলের কথা দেখলে তা পড়তে আগ্রহী হবে।

আর এটি হলো ইন্টারনাল লিংক যুক্ত করা। অর্থাৎ আপনার ওয়েবসাইট থেকেই অন্য পোষ্টের লিংক এই পোস্টে সংযুক্ত করণ। এখন যদি আপনি আপনার আর্টিকেলে অন্য কোনো ওয়েবসাইটের লিংক যুক্ত করতে চান তাহলে সেটি হবে এক্সটার্নাল লিংক সংযুক্ত করণ। বিভিন্ন প্রয়োজনে এটি করতে হয়। কিন্তু একটির বেশি এক্সটার্নাল লিঙ্ক ব্যবহার না করায় ভালো। আবার ইন্টারনাল লিংকের ক্ষেত্রে ১৫০০ শব্দের জন্য ৩-৪টি লিংক দেওয়া ভালো।

     সহজ ও সঠিক ভাষায় আর্টিকেল লেখাঃ‌ আর্টিকেল লেখার সময় ভাষা অবশ্যই সহজ ও সাবলীল রাখা জরুরী। কেননা আর্টিকেলের মধ্যে জটিল কিংবা অপ্রয়োজনীয় শব্দের প্রয়োগ পাঠকের বিরক্তির কারণ হতে পারে। এছাড়াও আর্টিকেলের বিভিন্ন বিষয়বস্তু যদি জটিল করে উপস্থাপন করা হয় তাহলে পাঠকের জন্য তা বুঝতে অসুবিধার কারণ হবে। ফলে পাঠক আর্টিকেলটি শেষ পর্যন্ত পড়ার আগ্রহ হারিয়ে ফেলতে পারে। 

আবার অনেকেই পছন্দ না করার কারণে পরবর্তীতে আপনার ওয়েবসাইটের আর্টিকেল পড়তে চাইবে না। এজন্য আর্টিকেল লেখার সময় অবশ্যই খেয়াল রাখতে হবে তা যেন পাঠকের কাছে বোধগম্য হয়। আর্টিকেলের মধ্যে আপনি বা আমি শব্দের প্রয়োগ করতে হবে। এতে পাঠকের কাছে মনে হবে যেন তিনি আর্টিকেলটি পড়ার মাধ্যমে সরাসরি কথা বলছেন। এবং পাঠক আরো আগ্রহের সাথে আর্টিকেলটি শেষ পর্যন্ত পড়ার চেষ্টা করবেন।

আর্টিকেলে উপযুক্ত ফিটার ইমেজ ব্যবহার করাঃ একটি আর্টিকেলে কেবল লেখা থাকলেই ভালো লাগেনা। এজন্য আর্টিকেলের মধ্যে আকর্ষণীয় ইমেজ ব্যবহার করা জরুরী। সুন্দর এক বা একাধিক ফিচার ইমেজ আর্টিকেল পড়ার সময় পাঠকের আকর্ষণ বৃদ্ধি করতে সাহায্য করে এবং আর্টিকেলের মান বাড়ায়। কিন্তু এই ফিচার ইমেজ ব্যবহারের ক্ষেত্রে কিছু নিয়ম মাথায় রাখতে হবে। যেমন আপনি যে ছবিটি ব্যবহার করছেন তা অবশ্যই কপিরাইট ফ্রি হতে হবে। 

কেননা কপিরাইট যুক্ত কোনো ছবি আর্টিকেলে ব্যবহার করলে ওয়েবসাইট ব্যান হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে। এজন্য অবশ্যই ছবিকে কপিরাইট মুক্ত করতে হবে। অন্য কোনো ওয়েবসাইট থেকে ছবির লিংক কপি করে সেটি নিজের আর্টিকেলে বসানো উচিত না। এতে আপনার আর্টিকেলে বা ওয়েবসাইটে সেই ছবিটি ততক্ষণ থাকবে যতক্ষণ ওই ওয়েবসাইটে থাকবে। অর্থাৎ যে ওয়েবসাইট থেকে ছবির লিংক নিয়েছেন সেখান থেকে যদি ছবিটি ডিলিট করে দেওয়া হয় তাহলে আপনার ওয়েবসাইট থেকেও তা ডিলিট হয়ে যাবে।

এছাড়াও গুগল থেকে ছবি নেওয়ার সময় অবশ্যই যেগুলো ক্রিয়েটিভ কমন লাইসেন্স যুক্ত সেগুলো ব্যবহার করতে হবে। এগুলো সাধারণত কপিরাইট মুক্ত হয়ে থাকে। এই ধরনের ছবি ব্যবহারের ফলে ওয়েবসাইট ব্যান হওয়ার সম্ভাবনা কম থাকে কিন্তু একেবারেই থাকে না বললে ভুল হবে। এজন্য উচিত নিজের আর্টিকেলের জন্য নিজেই ছবি তৈরি করে নেওয়া। এটি করার জন্য ইউটিউবে বিভিন্ন ধরনের গ্রাফিক্স ডিজাইনের ভিডিও দেখে ধারণা নিলেই হয়।

আবার বর্তমানে বহুল প্রচলিত AI ব্যবহার করেও ক্রিয়েটিভ ইমেজ খুব সহজেই তৈরি করা সম্ভব। এটির ক্ষেত্রে সময় ও শ্রম উভয়ই কম লাগে এবং এটি সম্পূর্ণ নিরাপদ হিসেবে বিবেচিত। কিন্তু ছবির সাইজের ক্ষেত্রে খেয়াল রাখতে হবে যেন প্রতিটি ইমেজ ৫০kb এর নিচে হয়। এতে ওয়েবসাইট লোড নিতে সময় কম লাগে যা গুগল র‍্যাংকিং এ সাহায্য করে থাকে। এবং প্রতিটি ইমেজ SEO করতে হবে। ইমেজ SEO করার অনেক ভিডিও ইউটিউবে রয়েছে।

আর্টিকেলে স্ক্রিনশট ব্যবহার করার নিয়মঃ একটি আর্টিকেল লেখার সময় বিভিন্ন প্রয়োজনে বিভিন্ন প্রকার স্ক্রিনশট ব্যবহার করার প্রয়োজন পড়ে। আর সেই স্ক্রিনশটগুলো ব্যবহার করারও সঠিক নিয়ম রয়েছে। যেগুলো একটি আর্টিকেলকে সুন্দর করে তুলতে সাহায্য করে। যেমন স্ক্রিনশট নেওয়ার সময় অতিরিক্ত অংশ ক্রপ করে বাদ না দিলে তা দেখতে খারাপ দেখায়। তাই একটি স্ক্রিনশট নেওয়ার পর উপরে এবং নিচের অতিরিক্ত অপ্রয়োজনীয় অংশ ক্রপ করে নেওয়া উচিত।
আর্টিকেলে SS ব্যবহারের নিয়ম

আর্টিকেল লেখার সময় সঠিক বানান লেখাঃ যেকোনো আর্টিকেল লেখার ক্ষেত্রে শুদ্ধ বানানের ব্যবহার করা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। কেননা বানান ভুল হলে তা পাঠকের কাছে পড়ার সময় বিরক্তির কারণ হয়ে দাঁড়ায়। এছাড়াও ভুল বানানের কারণে গুগলের কাছে সেই আর্টিকেলের মান কমে যায় এবং র‍্যাংকিং এর ক্ষেত্রেও তা বাধার সৃষ্টি করে।  এজন্যই আর্টিকেল লেখার সময় কিংবা লেখার পরে ভুল বানানগুলো সঠিক করে নিতে হবে।

 আরো পড়ুনঃ পড়াশোনার পাশাপাশি আয় করার উপায়


আর্টিকেল লেখা শেষে রিভিশন দেওয়াঃ প্রতিটি আর্টিকেল লেখার পরে তা পুনরায় এক বা একাধিকবার রিভিশন দেওয়া দরকার। কেননা আর্টিকেল লেখার সময় আর্টিকেলের মধ্যে অজান্তেই নানা রকম ভুল হয়ে থাকে। সেগুলো পুনরায় রিভিশন দেওয়ার মাধ্যমে চোখে পড়ে এবং ঠিক করে নিতে হয়। অন্যথায় এই ভুলগুলোর কারণে আর্টিকেলের মান কমে যায় এবং পাঠকের কাছেও আর্টিকেলের গ্রহণযোগ্যতা কমে যায়।

আর্টিকেলের শুরুতে সূচিপত্র ব্যবহার করাঃ একটি আর্টিকেল লেখার সময় সেটির টাইটেল গুলোকে নিয়ে একটি সূচিপত্র প্রথমেই রাখা উচিত। এতে পাঠক তার সুবিধামতো নির্দিষ্ট বিষয় সম্পর্কে সহজে পড়তে পারবেন। এছাড়াও আর্টিকেলে কি কি বিষয় সম্পর্কে আলোচনা করা হয়েছে তা সম্পর্কেও একটি ভালো ধারণা পাবেন। আর্টিকেলের শুরুতে সূচিপত্রের ব্যবহার আর্টিকেলের মান উন্নত করে থাকে।

অন্য কোন জায়গায় আর্টিকেল লিখে না রাখাঃ অনেকে আর্টিকেল লেখার সময় সরাসরি ওয়েবসাইটের প্রথমে না লিখে বিভিন্ন ডিভাইসের নোটসে তা লিখে রাখে। এবং পরবর্তীতে সেখান থেকে কপি করে নিজের ওয়েবসাইটে পেস্ট করেন। যেমন অনেকে মোবাইল, কম্পিউটার বা ল্যাপটপের নোটপ্যাডে অথবা মাইক্রোসফট ওয়ার্ডে আর্টিকেল লিখে রেখে পরে তা ওয়েবসাইটে কপি পেস্ট করে। এর ফলে অতিরিক্ত কোড কপি হয়ে যায় এবং ফরমেটও চেঞ্জ হয়ে যায়। 

যার ফলে আর্টিকেলের মান কমে যায় এবং তা গুগলে রাঙ্ক হতে পারে না। অনেক সময় নানা কারণে ওয়েবসাইট ব্লক হয়ে যায় বা ব্যান হয়ে যায়। এসব কারণে অন্য জায়গায় আর্টিকেল লিখে রাখা উচিত নয়। শুরু থেকেই সরাসরি ওয়েব সাইটে আর্টিকেল লিখে রাখতে হবে। এছাড়াও অন্য কোনো ওয়েবসাইট থেকে কোনো বিষয়ের আর্টিকেল সরাসরি কপি করা যাবে না। এতে কপিরাইট আইন লঙ্ঘিত হয়ে ওয়েবসাইট চিরতরে হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে।

আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স দিয়ে আর্টিকেল না লেখাঃ বর্তমান প্রযুক্তির উন্নয়নে বিভিন্ন মাধ্যম তৈরি হয়েছে যা মানুষের মতো কাজ করতে পারে। সেগুলোর মধ্যে একটি হলো AI ব্যবহার করে আর্টিকেল লেখা। বিভিন্ন ওয়েবসাইটের মাধ্যমে এটি করা হয়ে থাকে। অর্থাৎ একটি বিষয়ের উপর নিজে আর্টিকেল না লিখে AI ব্যবহার করে আর্টিকেল লেখিয়ে নেওয়া সম্ভব। এটির ফলে অনেকেই সময় ও শ্রমের খরচ কম করতে পারে।

কিন্তু পক্ষান্তরেই এটির ফলে ওয়েবসাইটের মারাত্মক ক্ষতি হওয়ার আশঙ্কা তৈরি হয়। কেননা AI দিয়ে আর্টিকেল দেখানো হলে অনেক ক্ষেত্রেই সঠিক বা নির্ভুল তথ্য পাওয়া যায় না এবং গুগল তা সহজেই ধরতে পারে। ফলে ভুল তথ্য দিয়ে আর্টিকেল লেখার ফলে গুগল আপনার ওয়েবসাইটকে ব্যান করে দিতে পারে। এজন্য আর্টিকেল লেখার সময় কখনোই AI ব্যবহার করা উচিত নয়।

বাংলায় আর্টিকেল লিখে আয় করার বিভিন্ন উপায়ঃ‌ 

বাংলায় আর্টিকেল লিখে আয় করার বিভিন্ন উপায় রয়েছে। যার কারণে দিন দিন আর্টিকেল রাইটিং এর কাজ জনপ্রিয় হয়ে উঠছে। দেশে-বিদেশের বিভিন্ন মানুষ আর্টিকেল রাইটিংকে পেশা হিসেবে গ্রহণ করছে। এতক্ষণ আমরা আর্টিকেল রাইটিং এর বিভিন্ন নিয়ম নীতি সম্পর্কে জানতে পেরেছি। এখন তাহলে জেনে নেওয়া যাক কিভাবে এই আর্টিকেল রাইটিং এর মাধ্যমে আয় করা সম্ভব। 

ব্লগিং শুরু করেঃ বাংলায় আর্টিকেল লিখে আয় করার জন্য আপনি ব্লগিং করতে পারেন। এটি হলো এমন একটি মাধ্যম যেখানে আপনি আপনার বিভিন্ন বিষয় সম্পর্কিত চিন্তা, ধারণা বা অর্জিত জ্ঞান উপস্থাপন করতে পারবেন। বর্তমানে অনলাইনের একটি জনপ্রিয় কাজ হলো এই ব্লগিং। এটি করার জন্য আপনার একটি নিজস্ব ওয়েবসাইট প্রয়োজন হবে যেখানে আপনি নিয়মিত আর্টিকেল লিখে তা ধীরে ধীরে গুগলে রাঙ্ক করানোর মাধ্যমে তাই করতে পারবেন।

ব্লগিং ওয়েবসাইট বিক্রি করেঃ আপনি চাইলে ব্লগিং ওয়েবসাইট তৈরি করে তা বিক্রি করার মাধ্যমেও আয় করতে পারেন। অর্থাৎ একটি ওয়েবসাইটে আপনি সঠিক নিয়মে বাংলায় আর্টিকেল লিখে তা গুগলে রাঙ্ক করাবেন। এবং তা পরবর্তীতে ভালো দামে অন্যের কাছে বিক্রি করে আয় করতে পারবেন। 

 আরো পড়ুনঃ অনলাইনে টাকা ইনকাম করার উপায়- পেমেন্ট মাধ্যম বিকাশ


আর্টিকেল রাইটিং জব করেঃ বর্তমানে যেহেতু আর্টিকেল রাইটিং এর চাহিদা বৃদ্ধি পেয়েছে তাই বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান দক্ষ আর্টিকেল রাইটারদের খোঁজ করে থাকে। অর্থাৎ আপনি যদি একজন ভালো আর্টিকেল রাইটার হতে পারেন তাহলে সহজেই ঘরে বসে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের আর্টিকেল রাইটার পদে যোগদান করে অর্থ উপার্জন করতে পারবেন। 

আর্টিকেল রাইটিং এর কোর্স করিয়েঃ আপনি যদি আর্টিকেল রাইটিং এ দক্ষতা অর্জন করতে পারেন তাহলে পরবর্তীতে তা অন্যদেরকেও শিখাতে পারবেন। অর্থাৎ নিজে একজন দক্ষ আর্টিকেল রাইটার হিসেবে নিজের অর্জিত জ্ঞান ও অভিজ্ঞতার আলোকে আর্টিকেল রাইটিং এ আগ্রহী ব্যক্তিদেরকে কোর্স করে আয় করার একটি সুযোগ রয়েছে। আমাদের দেশে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান আর্টিকেল রাইটিং এর কোর্স করিয়ে প্রচুর পরিমাণে অর্থ উপার্জন করে থাকে। 

ফ্রিল্যান্সিং সাইডে আর্টিকেল লেখাঃ বিভিন্ন জনপ্রিয় ফ্রিল্যান্সিং প্ল্যাটফর্ম যেমন ফাইবার, আপ ওয়ার্ক, freelancer.com ইত্যাদি আর্টিকেল লিখে আয় করার কিছু জনপ্রিয় মাধ্যম। যেখানে বিভিন্ন দেশের মানুষ বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আর্টিকেল লেখার জব করে থাকে। যদিও এই সাইট গুলোতে ইংরেজিতে আর্টিকেল লেখা হয়। কিন্তু বাংলাদেশি বিভিন্ন সাইট রয়েছে যেখানে বাংলায় আর্টিকেল লিখে একই ভাবে আয় করা সম্ভব।

বাংলায় আর্টিকেল লেখার নিয়ম সম্পর্কিত বিভিন্ন প্রশ্নোত্তর

আর্টিকেল লেখার নিয়ম সম্পর্কিত বিভিন্ন প্রশ্নোত্তর

আর্টিকেল রাইটিং কি??
উত্তরঃ আর্টিকেল রাইটিং মূলত একটি প্রবন্ধ লেখার প্রক্রিয়া। আপনি আপনার চিন্তা ধারণা বা মতামত প্রকাশ করার জন্য যখন কোনো প্রবন্ধ লেখেন তখন সেটিকে আর্টিকেল বলা হয়।

কোনো আর্টিকেল লেখার প্রথম ধাপ কোনটি??
উত্তরঃ‌ একটি আর্টিকেল লেখার প্রথম ধাপ হিসেবে সঠিক নিশ বা ফোকাস কি ওয়ার্ড নির্বাচন করাকে বিবেচিত করা যায়।

আর্টিকেল কোথায় লিখতে হয়??
উত্তরঃ‌ বিভিন্ন ওয়েবসাইট ব্যবহার করার মাধ্যমে আপনি সেখানে আর্টিকেল লিখতে পারেন।

গুগলে আর্টিকেল কিভাবে পোস্ট করবো??
উত্তরঃ গুগলে আর্টিকেল পোস্ট করার জন্য প্রথমে আপনার একটি ওয়েবসাইট প্রয়োজন। যেটি গুগল সার্চ কনসোলে জমা দেওয়ার মাধ্যমে আপনি আর্টিকেল পোস্ট করতে পারবেন।

আর্টিকেল লিখে কি আয় করা যায়??
উত্তরঃ হ্যাঁ, আর্টিকেল লিখে আয় করা যায়। উপরে আমরা আর্টিকেল লিখে আয় করার কয়েকটি মাধ্যম সম্পর্কে আলোচনা করেছি।

একজন আর্টিকেল রাইটার কত টাকা আয় করতে পারে??
উত্তরঃ একজন আর্টিকেল রাইটারের আয় নির্ভর করে তার কাজের উপর। যে যত বেশি দক্ষতার সাথে আর্টিকেল লিখতে পারবে তার আয় কত বেশি হবে।

AI ব্যবহার করে আর্টিকেল লেখা যাবে কিনা??
উত্তরঃ ভুলেও না। আর্টিকেল লেখার ক্ষেত্রে অবশ্যই নিজের জ্ঞান বা ধারণা ব্যবহার করতে হবে। AI ব্যবহার করে আপনি নির্দিষ্ট বিষয়ে ধারণা নিতে পারেন কিন্তু AI দিয়ে সম্পূর্ণ আর্টিকেল লিখিয়ে নেওয়া কখনোই উচিত না।

শেষ কথা- বাংলা আর্টিকেল লেখার নিয়ম 

বাংলা আর্টিকেল লেখার নিয়ম সম্পর্কে উপরে আমরা বিস্তারিত আলোচনা করার চেষ্টা করেছি। এখানে উল্লেখিত সকল নিয়মগুলো পালন করার মাধ্যমে আপনি SEO ফ্রেন্ডলি আর্টিকেল লিখতে সক্ষম হবেন। এবং সঠিকভাবে আর্টিকেল লিখে দক্ষ আর্টিকেল রাইটার হিসেবে বিভিন্ন উপায়ে আয় করার মাধ্যমগুলো সম্পর্কেও আমরা উপরে জেনেছি। আজকের আর্টিকেলটি যদি ভালো লেগে থাকে তাহলে অবশ্যই বন্ধুদের সাথে শেয়ার করুন। এবং পরবর্তীতে কোন বিষয়ের উপর আর্টিকেল পড়তে চান তা কমেন্টের মাধ্যমে আমাদেরকে জানান। আজকের জন্য এখানেই শেষ করছি। ধন্যবাদ!

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url