গর্ভাবস্থায় বিটরুট খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা
গর্ভাবস্থায় বিটরুট খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা আজকের আর্টিকেলে আমরা বিস্তারিত
জানতে চলেছি। তাই এই বিষয়ে সঠিক তথ্য জানতে পুড়ো আর্টিকেল আমাদের সাথেই
থাকুন।
গর্ভাবস্থার সময়টি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ও নাজুক। কাজেই এই সময় সকল
বিষয়ে খুব সাবধানতা অবলম্বন করা উচিত। খাদ্য তালিকা থেকে শুরু করে
জীবন যাপনের ধরন এই সময় একটু আলাদা হয়ে থাকে।
পেজ সূচিপত্রঃ গর্ভাবস্থায় বিটরুট খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা
- বিটরুট কী ও কেন খাবেন??
- গর্ভাবস্থায় বিটরুট খাওয়ার উপকারিতা
- কোষ্ঠকাঠিন্য দূরীকরণ
- আয়রনের ঘাটতি দূর করা
- ওজন কমানোর জন্য
- বিপাক নিয়ন্ত্রণ করার জন্য
- রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণ
- ভিটামিন সি সরবরাহ করা
- প্রদাহ রোধ করা
- অস্ট্রিওপোরোসিসের ঝুঁকি কমানো
- অ্যানিমিয়ার ঝুঁকি দূর করা
- অনাক্রম্যতা বৃদ্ধি করা
- জন্মগত ত্রুটি হ্রাস করা
- দৃষ্টিশক্তি বৃদ্ধিতে সহায়তা
- প্রি- ইক্লাম্পসিয়ার ঝুঁকি হ্রাস
- গর্ভাবস্থায় বিটরুট খাওয়ার অপকারিতা
- বিটরুট খাওয়া সম্পর্কিত কিছু প্রশ্নোত্তর
- শেষ কথা- গর্ভাবস্থায় বিটরুট খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা
বিটরুট কী ও কেন খাবেন??
বিটরুট কী ও কেন খাবেন তা জানেন কি?? যেকোনো খাবার গ্রহণের পূর্বে অবশ্যই সেটি সম্পর্কে সঠিক ধারণা থাকা উচিত। বিটরুট হলো এক ধরনের সবজি যাতে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন ও খনিজ রয়েছে। দেখতে ড্রাগন ফলের মতো অনেকটা লাল টুকটুকে হয়ে থাকে। অনেকে এর বাহ্যিক আকর্ষণের কারণে এটিকে এক ধরনের ফল হিসেবে বিবেচনা করে থাকে। দেখতে সুন্দর এই বিটরুট ভিটামিন, আয়রন, ক্যালসিয়াম, ম্যাগনেসিয়াম, জিংক এবং কপার সহ আরো অনেক পুষ্টি উপাদানে সমৃদ্ধ।
এতসব পুষ্টি উপাদানে সমৃদ্ধ হওয়ার কারণে এটিকে সুপার ফুড
হিসেবে বিবেচনা করলে ভুল হবে না। বাংলাদেশে বিটরুটের প্রচলন কিছুটা
কম। অনেকের ধারণা মতে, জার্মান, ইতালি বা ইউরোপের বিভিন্ন অঞ্চলে
এই বিটরুটের উৎপত্তি। কিন্তু ভারতের বেশ কিছু অঞ্চলেও এটি চাষ করা
হয়। যেমন পশ্চিমবঙ্গ হরিয়ানা উত্তর প্রদেশ মহারাষ্ট্র ইত্যাদি অঞ্চলগুলো
বিটরুট চাষের জন্য পরিচিত বলে জানা গেছে। শীতকালীন সবজি হলেও বিভিন্ন সুপার
শপে সারাবছরই এটি দেখা যায়।
অত্যন্ত উপকারী এই সবজিটি কাঁচা অথবা রান্না করে উভয় ভাবে খাওয়া
যায়। বিটরুট দিয়ে নানান
ধরনের জুস কিংবা শেক বানানো যায়। আবার এটি দিয়ে সালাদের চাহিদাও
অনেকেই মিটিয়ে থাকেন।বিভিন্ন সবজির সাথে রান্নার সময় এটি মিশিয়ে রান্না করে
খাওয়া যায়। নিয়মিত পরিমাণ মাফিক বিটরুট খাওয়ার অনেক বেনিফিট রয়েছে। মাথার চুল থেকে শুরু করে চোখ
ত্বক সবকিছু ভালো রাখতে সাহায্য করে থাকে এই উপকারী সবজি।
গর্ভাবস্থায় বিটরুট খাওয়ার উপকারিতা
গর্ভাবস্থায় বিটরুট খাওয়ার উপকারিতা আমাদের আজকের আর্টিকেলের একটি বিশেষ
অংশ। কেননা বিটের অনেক পুষ্টিগুণ গর্ভাবস্থায় মায়েদের এবং সন্তানের
জন্য গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে। আমাদের আশেপাশে অনেকেই
গর্ভাবস্থায় বিটরুট
খাওয়ার প্রতি বেশ গুরুত্ব দিয়ে থাকে। এর কারণ হলো এই
সময় বিটরুট খাওয়ার
একাধিক উপকারিতা আছে। বিশেষভাবে ভিটামিন ও পুষ্টি সমৃদ্ধ
হওয়ায় এটি ক্রমবর্ধমান ভ্রুনের জন্য নানান উপকারিতা সরবরাহ
করে থাকে।
কোষ্ঠকাঠিন্য দূরীকরণঃ মাতৃত্বকালীন সময়ে শরীর অনেক ফুলে যায়
এবং কোষ্ঠকাঠিন্য দেখা দেয়। এ সময় বিটরুটে থাকা ফাইবার শরীরের
কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করতে সাহায্য করে এছাড়াও এটি নিয়মিত পেট পরিষ্কার করে
থাকে।
আয়রনের ঘাটতি দূর করাঃ গর্ভাবস্থায় আয়রনের ঘাটতি অনেক পরিচিত
একটি ঘটনা। যার কারনে শরীর দুর্বলতা বা ক্লান্তি হাওয়া থেকে শুরু
করে নানা রকম ঝুঁকি সৃষ্টি হতে পারে। এমন
অবস্থায় আয়রনের ঘাটতি দূর করতে বিটরুট সাহায্য করতে পারে। এটি
স্বয়ং আয়রন সমৃদ্ধ হওয়ায় সরাসরি শরীরের আয়রনের ঘাটতি দূর করতে
পারে। বিশেষ করে যারা নিরামিষভুজি তাদের ক্ষেত্রে আয়রনের অনেক ভালো উৎস
হলো এই বিটরুট।
ওজন কমানোর জন্যঃ গর্বভাবস্থায় ওজন কমবেশি হওয়ার প্রবণতা
দেখা যায়। সাধারণত এই সময় ওজন বৃদ্ধি পায় যার কারণে ওজন কমানো কিংবা সঠিক
ওজন বজায় রাখার জন্য বিশেষভাবে খেয়াল রাখতে হয়। এই সময় ডায়েটের মধ্যে
যদি কাঁচা বিটরুট সালাদ হিসেবে কিংবা রান্না
করে অন্তর্ভুক্ত করা হয় তাহলে ওজন কমানোর ক্ষেত্রে বেশ উপকারিতা পাওয়া
সম্ভব।
বিপাক নিয়ন্ত্রণ করার জন্যঃ গর্ভাবস্থায় বিপাক
ক্রিয়া নিয়ন্ত্রণ করা খুব জরুরী। পটাশিয়াম সমৃদ্ধ খাবার এই কাজে
সাহায্য করে থাকে। বিটে ভালো পরিমানের পটাশিয়াম বিদ্যমান থাকায়
গর্ভাবস্থায় বিটরুট ইলেক্ট্রালাইটে ভারসাম্য আনতে এবং বিপাক ক্রিয়া নিয়ন্ত্রণে
রাখতে সাহায্য করে।
রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণঃ গর্ভাবস্থায় রক্তে শর্করার
পরিমাণ ঠিক থাকা জরুরী। নানান কারণে এসময় রক্তের শর্করার পরিমাণ পরিবর্তন
হয়ে থাকে। সেই পরিমাণ বা মাত্রা ঠিক রাখতে বা নিয়ন্ত্রণ করতে বিক্রোট
সাহায্য করে। কেননা এটি কম গ্লাইসেমিক যুক্ত খাদ্য যা রক্তের মধ্যে শোষিত
হতে এবং গ্লুকোজ হিসেবে রূপান্তরিত হতে কিছুটা সময় নিয়ে থাকে যা যা শরীরের
শর্করার মাত্রাকে সঠিক মাত্রায় পৌঁছে দিতে পারে।
ভিটামিন সি সরবরাহ করাঃ বিটের মধ্যে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন
সি থাকে। ফলে গর্ভাবস্থায় ভিটামিন সি এর অভাব দূর করার জন্য বিটরুট খুবই
ভালো একটি উৎস হতে পারে। এটিতে থাকা ভিটামিন সি স্বাস্থ্যকর
গর্ভাবস্থা ও প্রসবের পথ প্রশস্ত করে।
প্রদাহ রোধ করাঃ গর্ভাবস্থায় শারীরিক বিশেষ পরিবর্তনের
কারণে শরীরের বিভিন্ন অংশ বা জয়েন্টে জয়েন্টে ব্যথা ও প্রবাহের দেখা
দেয়। এই সমস্যাগুলো দূর করার জন্য বিটরুট অত্যন্ত
কার্যকরী। কেননা এটির মধ্যে থাকা বিটেন নামক একটি উপাদান এগুলোর
বিরুদ্ধে কাজ করে থাকে।
অস্ট্রিওপোরোসিসের ঝুঁকি কমানোঃ গর্ভাবস্থায় একটি বড় ঝুঁকি
হলো এই সময় শরীরের হাড়গুলো কিংবা দাঁত অত্যন্ত দুর্বল
ও ভঙ্গুর হয়ে যেতে পারে যেটিকে অস্ট্রিওপোরোসিসের ঝুঁকি বলা
হয়। এই সমস্যা থেকে রেহাই পাওয়ার জন্য বিটরুটে থাকা ক্যালসিয়াম
ও সিলিকা অত্যন্ত কার্যকর।
অ্যানিমিয়ার ঝুঁকি দূর করাঃ গর্ব অবস্থায় অ্যানিমিয়া ও
রক্তস্বল্পতা ঝুঁকি অত্যন্ত পরিচিত একটি বিষয়। এ সময় মায়ের রক্তের
স্বল্পতা দূর করার জন্য বা শরীরে হিমোগ্লোবিনের পরিমাণ বজায় রাখার জন্য বিটরুট
সাহায্য করতে পারে। কেননা এদের মধ্যে ভালো পরিমাণে আয়রন উপস্থিত থাকে যা
শরীরের লোহিত রক্ত কণিকার সংখ্যা বৃদ্ধি করতে সাহায্য করে।
অনাক্রম্যতা বৃদ্ধি করাঃ বিটরুটে থাকা
বিভিন্ন অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট গর্ভাবস্থায়
শরীরে অনাক্রম্যতার উন্নতি করে এবং বিভিন্ন সংক্রমণ থেকে রক্ষা
করে।
জন্মগত ত্রুটি হ্রাস করাঃ গর্ভাবস্থায় ভ্রূণের সঠিক বৃদ্ধি
ও মেরুদন্ডের সর্বোত্তম বিকাশ প্রয়োজন। যা ফলিক এসিড করে
থাকে। বিটরুটে থাকা এই উপাদান জন্মগত ত্রুটি যেমন বিফিডার এবং নিউরাল টিউবের
ত্রুটি প্রতিরোধে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।
দৃষ্টিশক্তি বৃদ্ধিতে সহায়তাঃ দৃষ্টি শক্তি বৃদ্ধিতেও বিটরুট অনেক
কার্যকর। ছোট বড় সকলেই দৃষ্টিশক্তির নানান সমস্যার সম্মুখীন হয়ে
থাকে। গর্ভবতী মায়েদের ক্ষেত্রে অনেক সময় দৃষ্টিশক্তি সমস্যা দেখা যায়
তখন এই সমস্যা দূর করার জন্য বিটরুট সাহায্য করে থাকে।
প্রি- ইক্লাম্পসিয়ার ঝুঁকি হ্রাসঃ গর্ভকালীন সময়ে
বিটরুট শরীরের রক্তচাপ কমানোর ক্ষেত্রে সাহায্য করে থাকে। যার ফলে এই
সময় বিটরুট খাওয়ার কারণে গর্ভবতী মায়েরা প্রি- ইক্লাম্পসিয়ার ঝুঁকি
থেকে রক্ষা পেতে পারে।
গর্ভাবস্থায় বিটরুট খাওয়ার অপকারিতা
গর্ভাবস্থায় বিটরুট খাওয়ার অপকারিতা গুলো সম্পর্কেও আমাদের সঠিক ধারণা
প্রয়োজন। কেননা যে কোন খাবার সঠিক নিয়ম না মেনে বিশেষ করে
গর্ভাবস্থায় খাওয়া উচিত না। এতে নানা রকম ঝুঁকি সৃষ্টি হওয়ার
সম্ভাবনা থাকে। আমরা এতক্ষন গর্ভাবস্থায় বিটরুট খাওয়ার উপকারিতা সম্পর্কে উপরে
জেনেছি। কিন্তু বিভিন্ন ক্ষেত্র বিশেষে গর্ভাবস্থায় বিটরুট খাওয়ার কিছু অপকারিতাও থাকতে পারে। চলুন তাহলে সেগুলো
জেনে নেওয়া যায়।
- বিটরুটের মধ্যে থাকা বিটেন এর কারণে বমি বমি ভাব, গা গোলানো, ডায়রিয়া বা অন্যান্য সমস্যা এই গর্ভকালীন অবস্থায় দেখা দিতে পারে।
- বিটরুটে থাকা নাইট্রেট উপাদান গর্ভাবস্থায় ক্লান্তি ও দূর্বলতার সৃষ্টি করতে পারে।
-
বেশি মাত্রায় বিটরুট খেলে বিটুরিয়া সৃষ্টি হতে পারে। যেটি
হলো প্রস্রাব বা মলের বর্ণ লাল রঙে রূপান্তর হওয়া। যদিও এটি খুব
জটিল সমস্যা না। কিন্তু এটির পাশাপাশি যদি পেটের বা অন্যান্য
কোন সমস্যা দেখা দেয় তাহলে অবশ্যই ডাক্তারের পরামর্শ নিতে হবে।
- সময় অনেক অতিরিক্ত পরিমাণ বিটের রস খাওয়ার ফলে গলার ভোকাল কর্ডে বা স্বরতন্ত্রে প্যারালাইসিস ঘটতে পারে বলে আশঙ্কা করা হয়।
- অনেকের কিডনি জনিত সমস্যা থাকলে বিটরুট খাওয়ার আগে অবশ্যই ডাক্তারের পরামর্শ. দিতে হবে। কেননা এটিতে থাকা অক্সালেট উপাদান কিডনিতে পাথর কারণ হয়ে উঠতে পারে।
বিটরুট খাওয়া সম্পর্কিত কিছু প্রশ্নোত্তর
বিটরুট খাওয়া সম্পর্কিত কিছু প্রশ্নোত্তর আমাদের মধ্যে দেখা যায়। যেগুলো
না জানার কারণে আমরা সঠিক উপায়ে বিটরুট ব্যবহার করতে বা খেতে পারি না। এই
সমস্যাগুলো দূর করার জন্য চলুন কিছু প্রশ্নের উত্তর বের করা যাক।
বিটরুট কাদের খাওয়া উচিত নয়??
উঃ যাদের কিডনির জটিল সমস্যা রয়েছে তাদের ক্ষেত্রে ডাক্তারের পরামর্শ ছাড়া বিটরুট খাওয়া উচিত না।
বিটরুট খেলে কী মোটা হয়??
উঃ না। বরং যারা ওজন কমাতে চান তারা নিজেদের ডায়েটে বিটরুট অ্যাড করতে পারেন।
বিটরুট খেলে কী ক্ষুধা কমে??
উঃ বিটরুটে থাকা ফাইবারের কারণে আমাদের ক্ষুধার অনুভূতি হ্রাস পায়।
খালি পেটে বিটরুট খাওয়া যাবে কি??
উঃ হ্যাঁ যাবে। খালি পেটে বিটরুট ও গাজরের জুস পান করলে অনেক উপকার পাওয়া
সম্ভব।
বিটরুট ও শালগম কি একই??
উঃ না। বিটরুট ও শালগম বাইরে থেকে দেখতে একই রকম মনে হলেও দুটি আসলে ভিন্ন
ভিন্ন জিনিস।
বিটরুটে কত ক্যালোরি থাকে??
উঃ একটী ১০০ গ্রাম কাঁচা বিটরুটে আনুমানিক ৪৩ ক্যালোরি থাকে।
প্রতিদিন কতটুকু বিটের রস খাওয়া যাবে??
উঃ প্রতিদিন ২৫০ মিলি বিটরুটের রস পান করা রক্তচাপের জন্য ভালো।
শেষ কথা- গর্ভাবস্থায় বিটরুট খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা
গর্ভাবস্থায় বিটরুট খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা উভয়ই রয়েছে। যদিও
অপকারিতার তুলনায় উপরাকিতা বেশি এজন্য গর্ভাবস্থায় বিটরুট
খাওয়ার জন্য অনেকে বেশ আগ্রহী হয়ে থাকেন বা পরামর্শ দিয়ে থাকেন। এই
সকল দিক বিবেচনায় আমরা উপরে নানান জানা অজানা তথ্য আপনাদের সামনে
তুলে ধরার চেষ্টা করেছি যা থেকে আপনারা সঠিক ধারনা পেয়ে থাকেন। আশা
করি আজকের আর্টিকেলটি আপনাদের উপকারে এসেছে। ধন্যবাদ!
অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url