রোজমেরি পাতার উপকারিতা ও অন্যান্য দিক
রোজমেরি পাতার উপকারিতা ও অন্যান্য দিক সম্পর্কে আজকের আর্টিকেলে আমরা বিস্তারিত
জানবো। আপনি যদি এটির বিভিন্ন দিক সম্পর্কে জানতে আগ্রহী হয়ে থাকেন তাহলে পুরো
আর্টিকেল জুড়ে আমাদের সাথেই থাকুন।
প্রাচীন এই ভেষজটি রূপচর্চা থেকে শুরু করে নানান ঔষুধী গুণাবলি সমৃদ্ধ। প্রাচীন
গ্রিক, রোমান ও মিশরীয় সভ্যতা থেকে এটির ব্যবহার প্রচিলত বলে জানা গেছে।
পেজ সূচীপত্রঃ রোজমেরি পাতার উপকারিতা ও অন্যান্য দিক
- রোজমেরি পাতার উপকারিতা
- রোজেমেরির অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট গুণাবলি
- স্মৃতিশক্তি বৃদ্ধিতে রোজেমেরি
- হজম শক্তি বৃদ্ধিতে রোজমেরি
- হৃদরোগ প্রতিরোধে রোজমেরি
- পেশি বা জয়েন্টের ব্যথা দূর করা
- ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ করতে রোজমেরি
- মানসিক চাপ কমাতে রোজমেরি
- রূপচর্চায় রোজেমেরি কীভাবে কাজে লাগাবেন
- ত্বকে রোজমেরির তেল সরাসরি ব্যবহারের নিয়মঃ
- রোজমেরি ও লেবুর ফেসপ্যাক
- রোজমেরি ফেস মাস্ক
- রোজমেরি ফেস টোনার
- রোজমেরি স্কিন পিলিং
- চুলের যত্নে রোজেমেরি ব্যবহারের নিয়ম
- রোজমেরি তেল চুলে মাসাজ
- রোজমেরি ও নারিকেল তেলের মিশ্রণ
- রোজমেরি ও অ্যালোভেরার মিশ্রণ
- রোজমেরি ও মেথি দিয়ে তৈরি প্যাক
- শেষ কথা - রোজমেরি পাতার উপকারিতা ও অন্যান্য দিক
রোজমেরি পাতার উপকারিতা
রোজমেরি পাতার উপকারিতা প্রাচীনকাল থেকেই আমাদের মাঝে বিরাজ করে আসছে। কিন্তু
আমাদের অনেকেই এই ব্যাপারে অবগত নাও থাকতে পারি কেননা বাংলাদেশে এটির প্রচলন
তুলনামুলক কম। কিন্তু দিন দিন এটিকে কেন্দ্র করে বিভিন্ন ফার্ম বা গার্ডেন
তৈরি হচ্ছে এবং চাষীদের কাছে এটির পরিচিতও বাড়ছে। যেহেতু এটি একটি
ভূমধ্যসাগরীয় গাছ হওয়ায় উষ্ম আবহাওয়া ও ড্রেনেজযুক্ত মাটিতে ভালো ফলন হয় তাই
বাংলাদেশের আবহাওয়া এটি চাষের জন্য বেশ উপযোগী।
রোজেমেরি যার বৈজ্ঞানিক নাম Rosmarinus officinalis মূলত সুগন্ধী যুক্ত একটি
গাছ। বিশ্বের বিভিন্ন দেশে চাষ করা এই উদ্ভিদ কিছুটা মিষ্টি, মসলাযুক্ত এবং
কিছুটা তিক্ত স্বাদের জন্য পরিচিত। এটি দিয়ে তৈরি তেল ও চা এর বিশেষ
জনপ্রিয়তা রয়েছে। এটি খাদ্য প্রস্তুত, সৌন্দর্যচর্চা এবং নানান স্বাস্থ্য
উপকারে ব্যবহার্য একটি ভেষজ।
রোজেমেরির অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট গুণাবলিঃ রোজেমেরি বিভিন্ন
অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট গুণাবলিতে সমৃদ্ধ। যার ফলে এটি শরীরকে বিভিন্ন রোগের
বিরুদ্ধে প্রতিরোধ করতে বা দেহের প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধিতে সাহায্য করে
থাকে। এটিতে থাকা রোজমেরেনিক এসিড এবং কারনোসিক এসিড আমাদের
শরীরের কোষের ক্ষতি কমে থাকে পাশাপাশি সেলুলার বৃদ্ধি করতেও সহায়তা
করে। এটির অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট গুণ ক্যান্সারের মতো দীর্ঘমেয়াদি রোগের
ঝুঁকি কমাতেও সাহায্য করে থাকে।
স্মৃতিশক্তি বৃদ্ধিতে রোজেমেরিঃ রোজমেরি দিয়ে তৈরি তেল বা এর
নির্যাস মানুষের মস্তিষ্কের কার্যক্ষমতাকে উন্নত করতে পারে। এটি আমাদের
স্মৃতিশক্তি বাড়াতে এবং মানসিকভাবে সুস্থ রাখতে সাহায্য করে। এটি নির্যাস
মস্তিষ্কের স্নায়ুতন্ত্রকে উদ্দীপ্ত করতে পারে যা মানুষের মনোযোগ ও
চিন্তাশক্তির বৃদ্ধি করতে সহায়ক। মস্তিষ্কের কোষের ক্ষতি থেকে রক্ষার
পাশাপাশি আলঝেইমার বা ডিমেনশিয়ার মতো রোগের ঝুঁকি কমাতেও রোজমেরি
সহায়তা করতে পারে।
হজম শক্তি বৃদ্ধিতে রোজমেরিঃ পেটের বিভিন্ন
সমস্যা বা দুর্বল হজম শক্তি দূর করতে রোজমেরির ব্যবহার
কার্যকর। হজমের জন্য এটি খুবই উপকারী হিসেবে গণ্য করা
হয়। রোজমেরির চা বা তেল ব্যবহারে হজমের প্রক্রিয়া উন্নত হওয়ার
পাশাপাশি গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা দূর হতে পারে। এছাড়াও
এটির ইনফ্লামেটরি গুণ পেটের অন্ত্রের শ্লৈষ্মিক ঝিল্লিকে শান্ত করেও
হজম প্রক্রিয়া উন্নত করতে সাহায্য করে।
হৃদরোগ প্রতিরোধে রোজমেরিঃ বিভিন্ন গবেষণায় প্রমাণ পাওয়া
গেছে যে, রোজমেরির কিছু উপাদান মানব দেহের রক্ত সঞ্চালন বৃদ্ধি
করতে এবং রক্তের চাপ নিয়ন্ত্রণ করতে সাহায্য করে থাকে যা থেকে হৃদরোগ
প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি পেতে পারে। এদের মধ্যে থাকা প্রদাহ বিরোধী উপাদান
কিনবা এনটিঅক্সিডেন্ট গুণ হৃদরোগের ঝুঁকি কমিয়ে থাকে। কিছু কিছু গবেষণায়
পাওয়া গেছে যে, রোজমেরি রক্তের চর্বি কমাতে সাহায্য করে এবং হার্ট
এটাকের ঝুঁকেও কমায়।
পেশি বা জয়েন্টের ব্যথা দূর করাঃ রোজমেরি তেল প্রদাহ
বিরোধী উপাদান নিয়ে গঠিত হয়। যার ফলে এটি ব্যবহার করলে শরীরের বিভিন্ন
জয়েন্টের ব্যথা, মাসল পেইন কিংবা আর্থ্রাইটিসের মতো যে কোন সমস্যা কমাতে
সাহায্য করে। এছাড়াও আমরা জেনেছি রোজমেরি রক্তের সঞ্চালন বা রক্তের
চাপ নিয়ন্ত্রণ করে থাকে। যার ফলেও শরীরের ব্যথা দূর হয় এবং আরামদায়ক অনুভূতি
পাওয়া যায়।
ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ করতে রোজমেরিঃ অনেক গবেষণায় এটিও
প্রমাণিত হয়েছে যে, রোজমেরিতে থাকা বিভিন্ন উপাদান মানুষের শরীরে
ইনসুলিন প্রতিক্রিয়াকেও বৃদ্ধি করতে সক্ষম। এটি রক্তের শর্করা স্তর
নিয়ন্ত্রণে কাজ করে থাকে। যার কারণে রোজমেরি ডায়াবেটিস রোগীদের
জন্য একটি সহায়ক উপাদান হিসেবে বিবেচিত হয়।
মানসিক চাপ কমাতে রোজমেরিঃ রোজমেরি যেহেতু একটি সুগন্ধি
গাছ তাই এটি সুগন্ধ মানুষের মস্তিষ্কে ইতিবাচক অনুভূতির প্রভাব
সৃষ্টি করতে পারে। যার ফলে অনেকেই মানসিক চাপ, উদ্বেগ কিংবা হতাশা থেকে
নিজেকে মুক্ত রাখতে সক্ষম হয়। এটি একটি প্রাকৃতিক এন্টি
ডিপ্রেসেন্ট হিসেবেও কাজ করতে পারে যা শরীরের ক্লান্তি দূর করতে সহায়ক।
রূপচর্চায় রোজেমেরি কীভাবে কাজে লাগাবেন
রূপচর্চায় রোজেমেরি কীভাবে কাজে লাগাবেন জানেন কি?? যদি উত্তর না হয়ে থাকে
তাহলে চলুন এখন জেনে নেওয়া যাক! রোজমেরি তেল এন্টিব্যাকটেরিয়াল ও
এন্টিফাঙ্গাল গুণ সমৃদ্ধ। যা মানব দেহের ত্বকের প্রদাহ, ব্রণ,
দাগ বা যে কোন ধরনের ফুসকুড়ির সমস্যার সমাধান করতে সাহায্য
করে থাকে। পাশাপাশি এটি আমাদের ত্বককে সতেজ রেখে এবং বয়সের ছাপ কমিয়েও
সাহায্য করে থাকে।রোজমেরির তেল সরাসরি মুখে ব্যবহার করার ফলে ত্বক
পুষ্টি পায় এবং সুরক্ষিত থাকে।
ত্বকে রোজমেরির তেল সরাসরি ব্যবহারের নিয়মঃ প্রথমবার
রোজমেরির তেল ব্যবহার করার আগে একবার সামান্য টেস্ট করে নেওয়া
দরকার। অর্থাৎ প্রথমে হাতে অল্প পরিমাণ এই তেল নিয়ে ত্বকের কোন এক
জায়গায় লাগিয়ে নিয়ে চেক করতে হবে যে এটি আপনার ত্বকে স্যুট করছে
কিনা। এটি করার জরুরী কেননা অনেক সময় রোজমেরির তেল ত্বকে
এলার্জির প্রতিক্রিয়া ঘটাতে পারে। ব্যবহারের ক্ষেত্রে ভালোভাবে এটিকে
ডাইলিউট করে নেওয়া বা পাতলা করে নেওয়া ভালো।
ব্যবহারের পদ্ধতিঃ রোজমেরির কয়েকটি পাতা একটি পাত্রে
গরম পানিতে আধা ঘন্টা রেখে দিন। পানি ঠান্ডা হয়ে এলে রোজমেরি পাতা
থেকে যে তরল টি পাওয়া যাবে তা চাইলে টোনার হিসেবে ব্যবহার করতে
পারেন। কিন্তু তেল হিসেবে ব্যবহার করার জন্য এটির সাথে নারিকেল তেল অথবা
অলিভ অয়েল মেশিয়ে নিলেই হবে।
রোজমেরি ও লেবুর ফেসপ্যাকঃ রোজমেরি ও লেবু দিয়ে তৈরি
ফেসপ্যাক ত্বকের উজ্জ্বলতা বৃদ্ধি করতে সহায়ক। কেননা লেবুর অ্যাসিড
এবং রোজমেরির অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট একসাথে ত্বককে উজ্জ্বলতা দিতে
পারে। এছাড়াও ডার্ক স্পট কমাতে বিশেষ করে রোদে পোড়া দাগ কমাতেও এটি
সহায়ক।
ব্যবহারের পদ্ধতিঃ রোজমেরি তেল দুই থেকে তিন ফোটা এবং এক
টেবিল চামচ পরিমাণ লেবুর রস ভালোভাবে মিশিয়ে একটি পেস্ট তৈরি করে নিতে
হবে। এরপর এটি সমস্যা যুক্ত স্থান যেমন ডার্ক স্পট ট বা ব্রণে
লাগিয়ে নিতে হবে। ১০ থেকে ১৫ মিনিট পর্যন্ত রাখলেই যথেষ্ট। তারপর
ভালোভাবে পানি দিয়ে মুখ ধুয়ে নিতে হবে।
রোজমেরি ফেস মাস্কঃ রোজমেরি দিয়ে তৈরি ফেস
মাস্ক ত্বকের গভীর থেকে ময়লা দূর করে তোকে পরিষ্কার করতে সক্ষম। এটি
ত্বকের পোর খুলে দিয়ে ময়লা তেল ও জীবাণু বের করে দেয়। এর পাশাপাশি
বিভিন্ন ব্রণ বা চর্ম রোগে দূর করতেও সহায়তা করে থাকে।
ব্যবহারের পদ্ধতিঃ ১ চা চামচ
পরিমাণ রোজমেরি তেলের সাথে ২ চা চামচ পরিমাণ মধু ১ চা
চামচ দুধ ভালোভাবে মিশিয়ে একটি পেস্ট তৈরি করে নিতে
হবে। এরপর এটি কোন মুখে লাগিয়ে ১৫ থেকে ২০ মিনিট অপেক্ষা করুন। এরপর এর
পরবর্তী ধাপে ঠান্ডা পানি দিয়ে মুখ ধুয়ে পরিষ্কার করেন।
রোজমেরি ফেস টোনারঃ রোজমেরি দিয়ে তৈরি টোনার আমাদের
ত্বকের জন্য খুবই উপকারী। হাইড্রেট রেখে পোর গুলো সংকুচিত করতে সাহায্য
করে। রোজমেরি টোনার ত্বককে টোন এবং রিফ্রেস করে।
ফেসের অতিরিক্ত তেল নিয়ন্ত্রণ করতে এবং ত্বককে শীতল রাখতেও এটি
সাহায্য করে।
ব্যবহারের পদ্ধতিঃ এক কাপ গরম পানিতে রোজমেরির কিছু
পাতা ১০ মিনিট ধরে ফুটিয়ে নিতে হবে।এরপর সেই পানি ঠান্ডা হলে একটি স্প্রে
বোতলে ঢেলে নিয়ে মুখে টোনার হিসেবে স্প্রে করুন। এটি প্রতিদিন
এক্সপোলিয়েটর হিসেবে ব্যবহার করা যেতে পারে।
রোজমেরি স্কিন পিলিংঃ স্কিন পিলিং অর্থাৎ ত্বকের মৃত কোষ
দূর করার জন্য রোজমেরি প্যাক ব্যবহার করা যেতে পারে। এটি ত্বকের
উপরের মৃত কোষগুলো দূর করে ত্বককে মসৃণ ও নরম করতে পারে এবং এর পাশাপাশি
ত্বকের উজ্জ্বলতাও বৃদ্ধি করতে সক্ষম।
ব্যবহারের পদ্ধতিঃ ২ টেবিল চামচ রোজমেরি তেলের সাথে ১ চা
চামচ চিনি ও ১ চা চামচ মধু মিশিয়ে একটি স্ক্রাব তৈরি
করুন। এরপর এটি ত্বকে হালকা হাতে মাসাজ করে ১০ থেকে ১৫ মিনিটের
জন্য রেখে দিন। এরপর ঠান্ডা পানি দিয়ে মুখ ধুয়ে ফেলুন।
সতর্কতাঃ ত্বকে বেশি পরিমাণে রোজমেরি তেল ব্যবহার করা থেকে
বিরত থাকতে হবে। না হলে ত্বককে শুষ্ক করে দিতে পারে এবং ত্বকে লাল লাল ভাব
সৃষ্টি করতে পারে। যারা গর্ভবতী তাদের ক্ষেত্রে রোজমেরি ব্যবহারে
সর্তকতা অবলম্বন করতে হবে। কেননা অনেক সময় এটি আমাদের শ্বাস প্রশ্বাসের
সমস্যা সৃষ্টির জন্য দায়ী হতে পারে।
চুলের যত্নে রোজেমেরি ব্যবহারের নিয়ম
চুলের যত্নে রোজেমেরি ব্যবহারের নিয়ম আমাদের জানার আগ্রহের শেষ নেই।
কেননা রোজমেরি তেল ও পাতা আমাদের মাথার চুল পড়া,
খুশকি রোদ করতে সহায়ক। এটি আমাদের মাথার ত্বকের সমস্যা দূর করে
সুষম বৃদ্ধি করতে সহায়তা করে। চুলের স্বাস্থ্য বৃদ্ধি ও সৌন্দর্য
বৃদ্ধিতে রোজমেরির ব্যবহার সম্পর্কে এখনো আমরা বিস্তারিত জানবো।
রোজমেরি তেল চুলে মাসাজঃ মাথায় মাসাজ করার ফলে চুলের
গোড়া শক্ত হয়ে চুল বৃদ্ধিতে সহায়তা করে। এটি আমাদের মাথার রক্ত সঞ্চালন
বৃদ্ধি করে চুলের মূল শক্তিশালী করে। রোজমেরি
DHT হরমোন অর্থাৎ যা চুল করার মূল কারণ সেটির প্রভাব কমাতে সাহায্য
করে। এবং চুলের ঘনত্ব বৃদ্ধি করতে পারে।
ব্যবহারের পদ্ধতিঃ রোজমেরি তেল দুই থেকে তিন ফোঁটা
নিয়ে এর সাথে নারিকেল তেল, অলিভ অয়েল অথবা জোজোবা ওয়েল
মিশিয়ে নিতে হবে। এরপর এই মিশ্রণটি মাথার স্ক্যাল্পে লাগিয়ে
ভালোভাবে মেসেজ করুন। ৫ থেকে ১০ মিনিট মেসেজ করার পর হালকা হাতে গোলাকার
ভাবে চাপ দিন। ৩০ থেকে ১ ঘণ্টা পর্যন্ত তেলটি মাথায় রেখে শ্যাম্পু করে
নিন। সপ্তাহে দুই থেকে তিনবার এটি ব্যবহার করা ভালো।
রোজমেরি ও নারিকেল তেলের মিশ্রণঃ রোজমেরি ও নারিকেল
তেল একসাথে চুলে ব্যবহার করলে চুলের যে রুক্ষ ভাব থাকে তা দূর করা
সম্ভব। এটি মাথার ত্বককে পুষ্টি দিতে পারে। নারিকেল তেল চুলের
মশ্চারাইজার হিসেবে খুবই কার্যকর। যার ফলে নারিকেল তেলের
সাথে রোজমেরি তেলের ব্যবহার চুলের আদ্রতা বজায় রাখে এবং চুলের
ড্যানড্রাফ দূর করে থাকে।
ব্যবহারের নিয়মঃ এক টেবিল চামচ নারিকেল তেলের সাথে চার থেকে
পাঁচ ফোটা রোজমেরি তেল মিশিয়ে নিন। এরপর এই মিশ্রণটি চুলের গোড়া
থেকে আগ পর্যন্ত ভালোভাবে লাগিয়ে নিতে হবে। ৩০ থেকে ১ ঘন্টা পর মাথা ভালো হবে
ধুয়ে শ্যাম্পু করে নিন।
রোজমেরি ও অ্যালোভেরার মিশ্রণঃ রোজমেরি ও
অ্যালোভেরা একসাথে চুলের জন্য খুবই উপকারী।কেননা
অ্যালোভেরা একদিকে চুলকে মসৃণ ও আদ্র রাখতে সাহায্য করে অন্যদিকে
রোজমেরি চুলের পুষ্টি বৃদ্ধি করে থাকে। এতে চুল তুলনামূলকভাবে অনেক
নরম ও মসৃণ হয়।
ব্যবহারের পদ্ধতিঃ দুই থেকে তিন টেবিল চামচ
অ্যালোভেরা জেল এবং চার থেকে পাঁচ ফোটা রোজমেরি অয়েল
একসাথে ভালোভাবে মিশিয়ে নিতে হবে। এরপরে এর যে পেস্টটি তৈরি হবে তা
২০ থেকে ৩০ মিনিটের জন্য চুলে লাগিয়ে রেখে দিন। এরপর শুধু শান্ত
দিয়ে ধুয়ে ভালোভাবে পরিষ্কার করে নিন।
রোজমেরি ও মেথি দিয়ে তৈরি প্যাকঃ মেথি চুলের স্বাস্থ্য উন্নত
করার জন্য অত্যন্ত জনপ্রিয় একটি উপাদান। যা চুলের
শিকড়কে মজবুত করতে এবং চুলকে মসৃণ করতে সাহায্য করে। এই মেথির
সাথে রোজমেরির ব্যবহার চুলের পুষ্টি গুণাগুনকে আরো বৃদ্ধি করতে পারে।
উভয়েই চুলের ঘনত্ব ও উজ্জ্বলতা বাড়াতে সক্ষম।
ব্যবহারের নিয়মঃ এক থেকে দুই টেবিল চামচ বৃদ্ধি পাউডার দুই থেকে
চার ফোঁটা রোজমেরি তেলের সাথে ভালোভাবে মিশিয়ে একটি পেস্ট তৈরি করে
নিন। এরপর এই পেস্টটি চুলে এবং চুলের গোড়ায় ভালোভাবে লাগে এক ঘন্টা
মতো অপেক্ষা করুন। এরপর শ্যাম্পু করে চুল ভালোভাবে ধুয়ে নিন।
শেষ কথা - রোজমেরি পাতার উপকারিতা ও অন্যান্য দিক
রোজমেরি পাতার উপকারিতা ও অন্যান্য দিক নিয়ে উপরে আমরা বিস্তারিত আলোচনা
করেছি। কেননা এটি আমাদের জন্য অনেক উপকারি উপাদান। তাই আপনারা যেন রোজমেরি
সম্পর্কে সকল সঠিক তথ্য জানতে পারেন এবং এটি ব্যবহারের সঠিক পদ্ধতি অবলম্বন
করতে পারেন সেজন্যই আমাদের আজকের আর্টিকেলটি প্রস্তুত করা হয়েছে। আশা করি
আজকের আর্টিকেলটি পড়ে আপনারা উপকৃত হয়েছেন। পরবর্তীতে কোন বিষয়ে আর্টিকেল
পড়তে চান তা আমাদেরকে জানাতে নিচে কমেন্ট করুন। ধন্যবাদ!
অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url