ফেসবুক টু ফ্যাক্টর অথেনটিকেশন বন্ধ করার নিয়ম

 
ফেসবুক টু ফ্যাক্টর অথেনটিকেশন বন্ধ করার নিয়ম সম্পর্কে আজকে থাকছে বিস্তারিত আলোচনা। কিভাবে ফেসবুকের টু ফ্যাক্টর অথেনটিকেশন বন্ধ করা হয় তা সম্পর্কে যদি না জেনে থাকেন তাহলে আজকের আর্টিকেলটি মনোযোগ সহকারে পড়ুন।
ফেসবুক টু ফ্যাক্টর অথেনটিকেশন বন্ধ করার নিয়ম

ফেসবুকে কিংবা অন্যান্য সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এই অপশন টি মূলত অধিক নিরাপত্তা প্রদানের কাজ করে থাকে। আজকে এটি বন্ধ করার পাশাপাশি কিভাবে এটি কাজ করে এবং এটির সুবিধা-অসুবিধার ব্যাপারেও থাকছে বিস্তারিত আলোচনা।

পেজ সূচিপত্রঃ ফেসবুক টু ফ্যাক্টর অথেনটিকেশন বন্ধ করার নিয়ম

ফেসবুক টু ফ্যাক্টর অথেনটিকেশন বন্ধ করার নিয়ম

ফেসবুক টু ফ্যাক্টর অথেনটিকেশন বন্ধ করার নিয়ম জানতে নিচের ধাপগুলো অনুসরণ করুন।
১.ফেসবুক লগইনঃ প্রথমেই আপনার যেকোনো ডিভাইস দিয়ে যে ফেসবুক একাউন্টের টু ফ্যাক্টর অথেনটিকেশন বন্ধ করবেন সেটি লগইন করে নিতে হবে। 
২. সেটিংসে প্রবেশঃ এরপর উপরে ডান পাশে থ্রি লাইন মেনুতে ক্লিক করে নিচে নেমে Settings & privacy তে ক্লিক করুন এবং সেখান থেকে Privacy and security তে ক্লিক করুন।

ফেসবুক টু ফ্যাক্টর অথেনটিকেশন বন্ধ করার উপায়
৩. এরপর দ্বিতীয় অপশনেই টু ফ্যাক্টর অথেনটিকেশন দেখা যাবে সেখানে ক্লিক করুন। এরপর SMS or WhatsApp অপশনটিতে ক্লিক করুন। 
৪. এরপরের ধাপে আবার SMS or WhatsApp লেখা দেখা যাবে যার পাশে একটি নীল বাটন থাকবে। সেই বাটনটিতে ক্লিক করলেই Turn off অপশন সামনে আসবে। এবং এটিতে ক্লিক করার মাধ্যমেই আপনার ফেসবুক টু ফ্যাক্টর অথেনটিকেশন বন্ধ হয়ে যাবে।

ফেসবুক টু ফ্যাক্টর অথেনটিকেশন বন্ধ

ফেসবুক  টু ফ্যাক্টর অথেনটিকেশন কী

ফেসবুক  টু ফ্যাক্টর অথেনটিকেশন কী তা সঠিক বা সম্পূর্ণ ধারণা আমাদের অনেকের মধ্যেই হয়তো নেই। এটি মূলত একটি নিরাপত্তা পদ্ধতি যা আমাদের ফেসবুক অ্যাকাউন্টের সুরক্ষা বৃদ্ধি করে। আমরা যখন ফেসবুক লগইন করি তখন স্বাভাবিক ভাবেই একটি পাসওয়ার্ড দিতে হয়। কিন্তু এই ফেসবুক টু ফ্যাক্টর অথেনটিকেশন পাসওয়ার্ড দেওয়ার পরেও আরেকটি কোড দিতে বলে যার ফলে ব্যবহারকারীর সত্যতা নিশ্চিত করা যায়।

 আরো পড়ুনঃ ফেসবুক আইডি রেস্ট্রিক্টেড হলে করণীয়

ফেসবুক টু ফ্যাক্টর অথেনটিকেশন চালু রাখার উপকারিতা

ফেসবুক টু ফ্যাক্টর অথেনটিকেশন চালু রাখার উপকারিতা গুলো সম্পর্কে জানা থাকলে এটি ব্যবহার করা আমাদের কাছে আরো সহজ হয়ে যাবে। এটি কী কাজ করে তা আমরা আগেই জেনেছি এখন এটি চালু রাখার ফলে কী কী উপকার পাওয়া যাবে সেই বিষয়ে বিস্তারিত জানা প্রয়োজন। এটি নিরাপত্তার অতিরিক্ত একটি স্তর। অচেনা কোনো ব্যক্তি বা হ্যাকার যদি আপনার ফেসবুক অ্যাকাউন্টে প্রবেশ করতে চায় তাহলে এটি বাধার সৃষ্টি করবে।

কিভাবে ভাবছেন? ফেসবুক টু ফ্যাক্টর অথেনটিকেশন চালু রাখার ফলে অ্যাকাউন্টে প্রবেশের জন্য দ্বৈত ভাবে যাচাই করণের প্রয়োজন হয়। অর্থাৎ প্রথম অবস্থায় পাসওয়ার্ড প্রদানের পরে ফেসবুক থেকে যাচাইকরণের জন্য একটি কোড পাঠানো হয়। এই কোডটি সাধারণত মোবাইল নাম্বারে মেসেজ কিংবা কল করে জানানো হয়। আবার হোয়াটস অ্যাপের মাধ্যমেও জানানো হয়। এবং এই কোড ছাড়া ফেসবুকে প্রবেশ করা যায়না। 

কাজেই অপরিচিত কেউ কিংবা হ্যাকার এই কোড ছাড়া আপনার ফেসবুক অ্যাকাউন্টে প্রবেশ করতে পারবে না। আবার কেউ যদি কোনো ভাবে আপনার ফেসবুকের পাসওয়ার্ড জেনে অন্য ডিভাইস থেকে লগইন করার চেষ্টা করে তাহলে ফেসবুক তা নোটিফিকেশনের মাধ্যমে আপনাকে অবগত করবে। এবং আপনি কোড না দেওয়া পর্যন্ত কেউ প্রবেশ করতে পারবে না। এই ফেসবুক টু ফ্যাক্টর অথেনটিকেশন চালু রাখার ফলে উল্লেখযোগ্য ভাবে ফেসবুক হ্যাক হওয়ার সম্ভাবনা কমে যায়।

ফেসবুক টু ফ্যাক্টর অথেনটিকেশন কিভাবে চালু করে

ফেসবুক টু ফ্যাক্টর অথেনটিকেশন কিভাবে চালু করে তা সম্পর্কে চলুন জেনে নেওয়া যাক।
  • প্রথমে আপনার ফেসবুক একাউন্টে লগইন করে সেটিংসে প্রবেশ করুন। 
  • সেখান থেকে প্রাইভেসি এন্ড সিকিউরিটি তে ক্লিক করে টু ফ্যাক্টর অথেনটিকেশন খুঁজে বের করুন।
  • এরপর সেটিতে ক্লিক করে টার্ন অন করুন।
  • এরপর আপনাকে আপনার মোবাইল নাম্বার অ্যাড করার জন্য বলা হবে। সেখানে আপনার মোবাইল নাম্বার অ্যাড করুন।
  • এরপরের ধাপে সেই মোবাইল নাম্বারে ফেসবুক থেকে একটি কোড পাঠানো হবে এবং সেটি কনফার্ম করতে হবে। প্রাপ্ত কোডটি প্রদান করে কনটিনিউ করতে হবে।
  • এরপর কিছু ব্যাকআপ কোড তৈরি করতে হবে যেগুলো ফোনের অবর্তমানে ব্যবহার করে লগইন করা যাবে। তাই কোডগুলো তৈরি করে সংরক্ষণ করা খুব জরুরী। 
  • সবকিছু ঠিকঠাক থাকলে সেটিংসে সেভ করার পর ফেসবুক টু ফ্যাক্টর অথেনটিকেশন চালু হয়ে যাবে।

ফেসবুক টু ফ্যাক্টর অথেনটিকেশন চালু রাখার অসুবিধা 

ফেসবুক টু ফ্যাক্টর অথেনটিকেশন চালু রাখার অসুবিধাও কিছু রয়েছে। যেমন এটি চালু রেখে লগইনের ক্ষেত্রে কিছু বাকি ঝামেলা পোহাতে হয়। প্রতিবার লগইন করার সময় অতিরিক্ত কোড প্রদান করতে হয় যা অনেক ব্যবহারকারীর কাছে বিরক্তির কারণ হয়ে দাঁড়ায়। অনেক সময় মোবাইল নেটওয়ার্কের বিভিন্ন সমস্যা কিংবা প্রযুক্তিরগত কিছু সমস্যার কারণে কোড আসতে অনেক দেরি হয় যার ফলে দ্রুত লগইন বাধাগ্রস্ত হয়।

 আরো পড়ুনঃ টুইটার একাউন্ট খোলার নিয়ম ও অন্যান্য দিক

কখনো যদি ফোন হারিয়ে যায় তাহলেও একসেস হারিয়ে যাওয়ার ফলে লগইন করতে পারা যায় না। ফেসবুক টু ফ্যাক্টর অথেনটিকেশন চালু করার পর কিছু ব্যাকআপ কোড দেওয়া হয়। সেগুলো সঠিকভাবে সংরক্ষণ করে রাখতে না পারলে পরবর্তীতে লগইন করার ক্ষেত্রে ঝামেলার সৃষ্টি হয়। নতুন ডিভাইসে লগইন করার ক্ষেত্রে ব্যবহারকারীকে ভোট প্রদান করতে হয় যা অনেকের কাছে বিরক্তির কারণ। অনেকেই সঠিক কোড দিতে ব্যর্থ হয়।

ফেসবুক টু ফ্যাক্টর অথেনটিকেশনের কোড না আসার কারণ 

ফেসবুক টু ফ্যাক্টর অথেনটিকেশনের কোড না আসার কারণ কী তা না জানার কারণে আমাদের অনেককেই বিভিন্ন সময় নানান সমস্যার সম্মুখীন হতে হয়। বিভিন্ন কারণে ফেসবুকে টু ফ্যাক্টর অথেন্টিকেশন চালু থাকার ফলে লগিন করার সময় প্রয়োজনীয় কোড আসে না কিংবা আসতে দেরি হয়। এই কারণগুলো কী তা সম্পর্কে চলুন তাহলে বিস্তারিত জেনে নেওয়া যাক।

 আরো পড়ুনঃ আর্টিকেল লেখার নিয়ম- ব্লগে কন্টেন্ট লেখার নিয়ম

  • নেটওয়ার্ক প্রবলেমঃ‌ অনেক সময় আমাদের ফোনের নেটওয়ার্ক দুর্বল হওয়ার কারণে ফোনে কোড আসতে অনেক সময় লাগে।
  • সিমে সমস্যা থাকলেঃ যদি সিম কার্ডে কোন প্রকার সমস্যার তৈরি হয় কিংবা সিম যদি ঠিকমত কাজ না করে তাহলেও কোড আসতে সমস্যা হয়। 
  • ফেসবুক গ্লিজঃ অনেক সময় ফেসবুক আপডেট করার কাজ চলার কারণে নানা ধরনের সমস্যা দেখা যায় যার কারনে ভেরিফিকেশন কোড আসতে বেশি সময় লাগে। এ সকল সমস্যা কিছু সময়ের মধ্যে নিজে নিজেই ঠিক হয়ে যায়। 
  • নতুন ডিভাইসে লগইনঃ অনেক সময় নতুন ডিভাইসে লগইন করা হলে ফেসবুক ভেরিফিকেশন কোড আসতে কিছুটা দেরি হয়ে থাকে।
  • নাম্বার পরিবর্তনঃ অনেক সময় আমরা আমাদের ফোন নাম্বার পরিবর্তন করে থাকি। ফোন নম্বর পরিবর্তন করলে সেটি ফেসবুক সেটিংসে যেয়ে টু ফ্যাক্টর অথেনটিকেশনেও আপডেট করা জরুরী। তা না হলে ফেসবুক সঠিক নাম্বারে ভেরিফিকেশন কোড পাঠাতে পারবে না। 
  • ফোনের সেটিংসে প্রবলেমঃ অনেক সময় আমাদের ফোনের সেটিংস এর প্রবলেম থাকতে পারে। যার কারনে ফোনে মেসেজ কিংবা কল ঢুকতে সময় লাগে কিংবা সমস্যা হয়। এসব কারণেও ফেসবুক ভেরিফিকেশন কোড পাঠাতে পারে না।

ফেসবুক টু ফ্যাক্টর অথেনটিকেশনের কোড না আসলে করণীয় কী

ফেসবুক টু ফ্যাক্টর অথেনটিকেশনের কোড না আসলে করণীয় কী?? এখন নিশ্চয় এই প্রশ্ন মনে আছে! ফেসবুক টু ফ্যাক্টর অথেনটিকেশনের কোড না আসার কারণ গুলো যেহেতু জানা হলো এখন তাহলে এরকম হলে কী করা উচিত তা সম্পর্কে জেনে নেওয়া যাক।
ফেসবুক টু ফ্যাক্টর অথেনটিকেশনের কোড না আসলে করণীয়
  • মোবাইল নেটওয়ার্ক পরীক্ষাঃ মোবাইল নেটওয়ার্কের সমস্যার কারণে যেহেতু ফেসবুকের ভেরিফিকেশন কোড আসতে সমস্যা হয় তাই মোবাইলের নেটওয়ার্ক পরীক্ষা করে দেখতে হবে। প্রয়োজনে ওয়াইফাই কিংবা মোবাইল রিস্টার্ট করা দরকার।
  • সিম কার্ড পরীক্ষাঃ সিমের সমস্যার কারণে যেহেতু ফেসবুক থেকে ভেরিফিকেশন কোড আসতে পারেনা তাই সিমের কোনো সমস্যা হয়েছে কিনা তা যাচাই করে নিতে হবে।
  • অ্যাপ আপডেট করাঃ ফেসবুক প্রতিনিয়ত আপডেট হতে থাকে। এজন্য খেয়াল রাখতে হবে আপনার ফেসবুক অ্যাপটি সর্বশেষ আপডেট কবে হয়েছে। যদি আপডেট না থাকে তাহলে আপডেট করে নিতে হবে।
  • ফোনের সেটিংস যাচাইঃ ফোনের সেটিংসে সমস্যা থাকলে কোড আসতে সমস্যা দেখা যায় বলে ফোনের সেটিংস ঠিক আছে কিনা তা দেখতে হবে এবং না থাকলে ঠিক করে নিতে হবে। যেমন এসএমএস সেটিংস, অপারেটর সেটিংস।
  • ফোন রিস্টার্ট করাঃ অনেক সময় ফোন অতিরিক্ত ব্যবহার করার ফলে কিংবা অন্যান্য নানা কারণে সঠিকভাবে কাজ করতে পারে না। এসময় ফোনকে রিস্টার্ট করে নিলে ফেসবুক ভেরিফিকেশন কোডের সমস্যা দূর হতে পারে। 
  • বিকল্প পদ্ধতি ব্যবহারঃ ফেসবুকের কিছু অ্যাপ্লিকেশন ভিত্তিক অথেনটিকেশন পদ্ধতি রয়েছে। যেমন Google authenticator. প্রয়োজনে সেটি ব্যবহার করে দেখতে হবে।

শেষ কথাঃ ফেসবুক টু ফ্যাক্টর অথেনটিকেশন বন্ধ করার নিয়ম

ফেসবুক টু ফ্যাক্টর অথেনটিকেশন বন্ধ করার নিয়ম জানার পাশাপাশি এটি কিভাবে চালু করে ও চালু রাখার সুবিধা এবং অসুবিধা গুলো সম্পর্কেও আমরা উপরে বিস্তারিত আলোচনা করার চেষ্টা করেছি। আশা করি আজকের আর্টিকেলটি পড়ে আপনারা ফেসবুক টু ফ্যাক্টর অথেনটিকেশন সম্পর্কে একটি ভালো ধারণা পেয়েছেন এবং এটি কিভাবে ব্যবহার করবেন তা সম্পর্কেও জানতে পেরেছেন। আজকের আর্টিকেলটি যদি ভালো লেগে থাকে তাহলে অবশ্যই বন্ধুদের সাথে শেয়ার করুন এবং পরবর্তীতে কী সম্পর্কে আর্টিকেল করতে চান তা কমেন্ট করুন। ধন্যবাদ!

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url